পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

গল্প আর কখনো প্রকাশিত হয় নি! একেবারে প্রথম শ্রেণীর! অসাধারণ লেখনীর দান। মনে মনে মানলুম, প্রভাত একটি অদ্ভুত আবিষ্কার করেছেন বটে।

 কিন্তু কে এই শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়? এটি কি কোন বিখ্যাত লেখকের ছদ্মনাম? নূতন কোন লেখকেরই হাত একেবারে এত বেশী পাকা হ’তেই পারে না। অমন যে প্রতিভার অবতার রবীন্দ্রনাথ, তাঁরও প্রথম দিককার রচনায় বয়সোচিত দুর্বলতার অভাব নেই। হাঁসের বাচ্চারা জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই সাঁতার কেটে জলে ভাসতে পারে বটে, কিন্তু সাহিত্যিকরা লেখনীধারণের সঙ্গে সঙ্গেই পাকা লেখা লিখতে পারেন না। কত চেষ্টা ও পরিশ্রমের এবং দীর্ঘকালব্যাপী সাধনার পর একজন শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক পরিপূর্ণতা লাভ করেন, বিশেষজ্ঞদের কাছে তা অজানা নেই।

 খোঁজ নিতে লাগলুম এবং দুদিন পরেই জানতে পারলুম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মোটেই নতুন লেখক নন, যৌবন বয়স, থেকেই তিনি আড়ালে ব’সে নিয়মিত ভাবে সাহিত্য-সাধনা ক’রে আসছেন, এমন কি ১৩১৪ সালে তাঁর রচিত “বড়দিদি” উপন্যাস, “ভারতী” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল— যদিও সে সময়ে লেখকের নাম প্রকাশ করা হয় নি।

 তারপর “যমুনা”য় বেরুতে লাগল শরৎচন্দ্রের “পথনির্দেশ”, “বিন্দুর ছেলে” ও অন্যান্য রচনা। সে সময়ের কথা আমার বেশ মনে আছে। শরৎচন্দ্রের এক একটি নূতন রচনা প্রকাশিত হয়, আর সাহিত্য-সমাজে জাগে নব নব উত্তেজনা! এবং শরৎচন্দ্রের সঙ্গে সঙ্গে “যমুনা” পত্রিকারও নাম ফিরতে লাগল লোকের মুখে মুখে। তার গ্রাহক-সংখ্যাও বেড়ে উঠতে লাগল হু-হু ক’রে।

 ইতিমধ্যে “যমুনা”র সম্পাদক ফণীবাবুর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব

১৮১