পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

প্রগাঢ় হয়ে উঠেছে। বেশ মিষ্ট মানুষ ছিলেন তিনি। লেখক হিসাবে অসামান্য না হ’লেও, অন্য এক কারণে তিনি আমাদের সকলেরই কৃতজ্ঞতার উপরে দাবি করতে পারেন। শরৎচন্দ্রকে প্রকাশ্যভাবে সাহিত্যক্ষেত্রে নিয়ে এসেছিলেন সর্বপ্রথমে তিনিই এবং এই কার্যে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন আরো তিনজন বিখ্যাত লেখক— শ্রীসৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়, শ্রীউপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় ও শ্রীসুরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়

 আমার জীবনেও ঘটল এক ঘটনা। সরকারি চাকরি করতুম, আপিসের নাম “মিলিটারি অ্যাকাউণ্ট্‌স্”। চাকরি কোনদিনই আমার ধাতে সইত না, এর আগেও গুরুজনদের তাড়নায় আরো দুই জায়গায় চাকরি নিয়েছি, আবার ছেড়ে দিয়েছি। আপিসে গেলেই আমার মনে হ’ত, জলের মাছ যেন ডাঙায় এসে পড়েছি। তার উপরে ফণীবাবু প্রায়ই আপিসে এসে আমার সঙ্গে দেখা ক’রে বলতে লাগলেন, ‘হেমেন্দ্রবাবু, আপনি চাকরি ছাড়ুন, “যমুনা”র সম্পাদনার ভার গ্রহণ করুণ। আমি তাহ’লে ব্যবসার দিকটা দেখতে পারি।’ অবশেষে তাই করলুম। চাকরি ছাড়লুম। সেই আমার শেষ চাকরি।

 “যমুনা” কার্যালয়ে এসে আসন পাতলুম। কাগজের উপরে সম্পাদকরূপে ফণীবাবুর নামই রইল বটে, কিন্তু সাহিত্য সম্পর্কীয় সমস্ত কর্তব্যই আমাকে পালন করতে হ’ত। তার উপরে ফণীবাবুর পীড়াপীড়িতে নূতন ক’রে আবার গল্প-রচনা সুরু করি এবং সেই সূত্রেই শরৎচন্দ্রের সঙ্গে আমার পরিচয়।

 কিন্তু প্রথম পরিচয় হয় পত্রের দ্বারা, কারণ শরৎচন্দ্র তখন রেঙ্গুনে থাকতেন। “যমুনা”য় আমার “কেরাণী” নামে একটি ছোটগল্প প্রকাশিত হয় এবং সেটি পাঠ ক’রে তিনি আমাকে

১৮২