পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

একখানি উচ্ছ্বসিত প্রশংসাপূর্ণ পত্র লিখলেন। তারপর থেকে আমাদের দুজনের ভিতরে নিয়মিত ভাবে পত্রালাপ চলতে থাকে।

 একদিনের বৈকাল বেলা। “যমুনা” কার্যালয়ে টেবিলের ধারে ব’সে আমি রচনা নির্বাচন করছি, এমন সময়ে ঘরের ভিতরে একটি লোকের আবির্ভাব। নিতান্ত সাধারণ চেহারা। নাতিদীর্ঘ কৃশ দেহ, কালো রং, মাথার চুল এলোমেলো, একমুখ দাড়ি-গোঁফ, আধময়লা জামা-কাপড়, পায়ে চটি, সঙ্গে একটা লেড়ী কুকুরের বাচ্চা।

 জিজ্ঞাসা করলুম, ‘কাকে চাই?’

 —‘ফণীবাবুকে।’

 —‘তিনি এখনো আসেন নি।’

 —‘তাহ’লে আমি একটু বসব কি?’

 বিনাবাক্যব্যয়ে দূরের একখানা বেঞ্চির দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করলুম। তারপর আর সেদিকে না তাকিয়ে নিজের মনেই আমি কাজ করতে লাগলুম।

 বেশ কিছুক্ষণ কেটে যায়। লোকটির সঙ্গে কুকুরের বাচ্চাটা খেলা করতে লাগল। তারপর ফণীবাবুর প্রবেশ।

 ঘরে ঢুকেই তিনি শশব্যস্ত হয়ে ব’লে উঠলেন, ‘একি, শরৎবাবু যে! ওখানে বেঞ্চের উপরে ব’সে আছেন কেন?’

 তিনি আঙুল দিয়ে আমাকে দেখিয়ে মুখ টিপে হাসতে হাসতে বললেন, ‘উনি যে আমাকে এখানেই বসতে হুকুম দিলেন।’

 ফণীবাবু বললেন, ‘না, না, চেয়ারে এসে বসুন। সে কি হেমেন্দ্রবাবু, আপনি শরৎবাবুকে চিনতে পারেন নি?’

 আমি অপ্রস্তুত হয়ে বললুম, ‘কেমন ক’রে চিনব? আমি ভেবেছিলুম উনি দপ্তরী।’

১৮৩