পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

নির্দেশ ছিল, ‘দেখ বাপু, তুমি যদি কোন মানুষ চাপা দাও, তাহ’লে হয়তো আমি কিছু বলব না। কিন্তু তুমি যদি কোন কুকুরকে চাপা দাও, তাহ’লে তখনি তোমার চাকরিটি যাবে।’

 এই ভেলু যখন মারা পড়ে তখন শরৎচন্দ্রের মুখ দেখে বিস্মিত হয়েছিলুম। পুত্রশোকেও কোন মানুষের মুখ তেমন কাতর হয় না।

 মনোমোহন থিয়েটার। চলচ্চিত্রে শরৎচন্দ্রের প্রথম বই “আঁধারে আলো” দেখানো হচ্ছে। একখানা বিছানা-পাতা ‘বক্সে’র উপরে শরৎচন্দ্র ও শিশিরকুমার ভাদুড়ীর সঙ্গে ব’সে আছি আমি। ছবি দেখানো শেষ হ’ল। তারপর গাত্রোখান ক’রে শরৎচন্দ্র আবিষ্কার করলেন, তাঁর তালতলার চটির এক পাটি অদৃশ্য হয়েছে। অনেক খোঁজাখুজির পরেও চটির পাটি আর পাওয়া গেল না। সকলেরই ধারণা হ’ল, নিশ্চয়ই কোন চোরের কীর্তি! শরৎচন্দ্র তখন একপাটি চটি জুতাই বগলদাবা ক’রে নগ্নপদে প্রস্থানোদ্যত হলেন।

 আমি বললুম, ‘দাদা, ঐ একপাটি চটি আপনার আর কোন্ কাজে লাগবে? এইখানেই রেখে যান।’

 তিনি বললেন, ‘পাগল নাকি? চোর ব্যাটা আড়ালে কোথায় ঘাপ্‌টি মেরে ব’সে আছে। আমরা চ’লে গেলেই এই পাটিটাও নিয়ে যাবে।’

 বললুম, ‘কিন্তু একপাটি চটি নিয়ে আপনি কি করবেন?’

 —‘শিবপুরে যাচ্ছি। গঙ্গা পার হবার সময়ে জলে ফেলে দিয়ে যাব।’

 তিনি তাই-ই করেছিলেন। এদিকে পরদিন সকালেই থিয়েটারের চাকর ‘বক্সে’র তলা থেকে হারানো জুতোর পাটি টেনে বার করলে। কিন্তু তখন শরৎচন্দ্রের অন্য পাটিটাকে

১৯১