পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 শরৎচন্দ্রের সঙ্গে যখন আমার মৌখিক আলাপ হয় নি এবং যখন আমি তাঁকে চোখেও দেখি নি, সেই সময়ে (২০শে মার্চ, ১৯১৪ খৃঃ), রেঙ্গুন থেকে একখানি পত্রে তিনি আমাকে লিখেছিলেন: ‘আমার লেখার ওপরে আপনার অনুগ্রহ দেখে সত্যই বড় সুখী হয়েছি। অনেকেই অনুগ্রহ করেন বটে, কিন্তু লেখা আমার নিতান্তই মামুলী ধরণের। বিশেষত্ব আর কি আছে? তবে এটা ঠিক ক’রে রাখি যেন মনের সঙ্গে লেখার ঐক্য থাকে। যা ভাবি, তাই যেন লিখি। কে কি মনে করবে, ও কি বলবে, সেদিকে প্রায়ই তাকাই নে। বোধ করি এই জন্যেই লোকের মাঝে মাঝে ভালোও লাগে— কখনও বা লাগেও না, তবুও বড় একটা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ক’রে লেখককে অপমানিত করতে চায় না। *** আমার বাংলা ভাষার ওপর মোটেই দখল নেই বললে চলে—শব্দ সঞ্চয় খুব কম। কাজেই আমার লেখা সরল হয়—আমার পক্ষে শক্ত ক’রে লেখাই অসম্ভব। আমার মুর্খতাই আমার কাজে লেগেছে।’

 যে সময়ে শরৎচন্দ্র এই পত্রখানি লিখেছিলেন, তখন তিনি আবার বহুকাল অজ্ঞাতবাসের পর নূতন ক’রে সাহিত্য-সাধনায় নিযুক্ত হয়েছেন। খ্যাতির প্রথম ধাপে পদার্পণ করেছেন মাত্র। কিন্তু তখনও এমন অসাধারণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন নি যে, তাঁর উপর নির্ভর ক’রে একশো টাকা মাহিনার চাকরিটি ছেড়ে দিতে পারেন। অভাবিত আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তখনও তাঁর ধারণার মধ্যে ধরা দেয় নি। কিন্তু সেই সময়েই তাঁর মনের গড়নটি লক্ষ্য

১৯৪