পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

আগে সাংসারিক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হয়—এখনো সে বয়স তোমার হয় নি। আমি নিজে ত্রিশ বৎসর বয়সের আগে মৌলিক নাটক রচনায় হাত দিই নি।’

 আরো দু’চারটি কথার পর যুবকদ্বয়ের প্রস্থান। গিরিশচন্দ্রের সঙ্গে আরো অল্পক্ষণ বাক্যালাপ করলুম। কি কি কথা হ’ল, সব ভালো ক’রে মনে পড়ে না। বহুকাল আগের কথা, কখনো মনে পড়ে, কখনো পড়ে না।

 গাত্রোত্থান ক’রে বললুম, ‘আপনার কাছে উপদেশ পেতে এসেছিলুম, উপদেশ পেয়েছি।’

 —‘কি উপদেশ বাবা?’

 —‘সংসারে অভিজ্ঞতা না জন্মালে নাটক লিখতে নেই। আমিও আপনাকে আমার নাটক শোনাতে এসেছিলুম। কিন্তু আর তা শোনাবার দরকার নেই।’

 বাগবাজারের গিরিশভবনে আর একবার গিয়েছিলুম। তারপর তাঁর সঙ্গে আমার তৃতীয়বার দেখা হয় “কোহিনূর থিয়েটারে”র সামনেকার প্রাঙ্গণে। ফোয়ারার পাশের রাস্তায় তিনি পায়চারি করছিলেন। নমস্কার ক’রে সুধোলুম, ‘আজ তো থিয়েটারে আপনার কোন কাজ নেই, তবু আপনি এসেছেন!’

 তিনি বললেন, ‘শরীর আর বয় না, তবু অধ্যক্ষ যখন হয়েছি, আসতে হয় বৈকি!’

 মনে হচ্ছে, সেইদিনই তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলুম, ‘কোন সভা-সমিতিতে কখনো আপনার দেখা পাই না কেন?’

 অতি মৃদু হেসে তিনি বলেছিলেন, ‘সভা যাঁরা করেন তাঁরা আমাকে পাবার জন্যে ব্যস্ত নন। আর যেতেও আমার ইচ্ছা হয় না। উচ্চশিক্ষিতরা থিয়েটারে আমাদের অভিনয় দেখে খুশী হন

২৬