পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

বাধ্য হয়ে আসর বসালেন মুক্ত আকাশের তলায়। নির্দিষ্ট তারিখে মেরিয়ানের গান শুনতে এল পঁচাত্তর হাজার শ্রোতা এবং তারা প্রত্যেকেই এসেছিল টিকিট ক্রয় ক’রে।

 ও-দেশের সঙ্গে তুলনা করলে এদেশের কি দুরবস্থাই চোখে পড়ে! সাহিত্যিক ও চিত্রকর প্রভৃতি শ্রেণীর দেশীয় শিল্পীদের তো কায়ক্লেশে ভাত-কাপড় জোগাড় করতে করতেই প্রাণান্ত-পরিচ্ছেদ হয়ে ওঠে। সঙ্গীতের আবেদন অধিকতর সার্বজনীন বটে, কিন্তু কয়জন গাইয়ে বা বাজিয়ে এখানে জীবনব্যাপী সাধনার পরও যোগ্য পুরস্কার লাভ করেন? বিশেষ বিশেষ কারণে কিংবা গুটিকয় ধনী গুণগ্রাহীর পৃষ্ঠপোষকতায় কয়েকজন ভাগ্যবান দেশীয় সঙ্গীতবিদ্‌কে উঞ্ছবৃত্তি অবলম্বন করতে হয় না বটে, কিন্তু তাঁদের আঙুলের ডগায় গুণে ফেলা যায়। সংপ্রতি ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ গায়ক ওস্তাদ ফৈয়জ খাঁ পরলোকে গমন করেছেন। শেষ জীবনে তাঁকেও রীতিমত অর্থকৃচ্ছ্রতা ভোগ করতে হয়েছিল। এদেশে শিস্ দিয়ে ধনী হওয়া তো স্বপ্নাতীত ব্যাপার, প্রথম শ্রেণীর তুলনাহীন সঙ্গীতবিদ্‌কেও এখানে কঠোর জীবন-সংগ্রামের ভিতর দিয়ে ইহকাল কাটিয়ে দিতে হয়। আজ এই রকম এক অদ্বিতীয় গুণীর সঙ্গেই আপনাদের পরিচয় সাধন ক’রে দেব।

 করমতুল্লা খাঁ ও ককুভ খাঁ দুই ভাই, ভারতের উত্তর-পশ্চিমে তাঁদের জন্ম। তাঁরা ঘরানা শিল্পী —অর্থাৎ সঙ্গীতকে অবলম্বন করেছিলেন বংশানুক্রমে।

 স্বদেশে নাম কিনে তাঁরা য়ুরোপেও গিয়েছিলেন। পারীসহরের প্রদর্শনীতে ভ্রাতৃদ্বয়ের গুণপনা য়ুরোপীয় রসিকদেরও যথেষ্ট আকৃষ্ট করেছিল।

 মসজীদবাড়ী (এখন হেমেন্দ্র সেন) স্ট্রীটের স্বর্গীয় বন্ধুবর নরেন্দ্র-

৫৯