পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

চমকিত হই নি। ভূত সেখানে দেখা দেয় না বটে, কিন্তু অত্যন্ত অভদ্রের মত ইঁট-পাটকেল ছোঁড়ে। বাইরে মুক্তস্থানে নয়, বন্ধ ঘরের ভিতরে! কোন রকমেই এই অশান্তিকর উপদ্রব বন্ধ করতে না পেরে খাঁ-সাহেব শেষটা এক মোক্ষম উপায় অবলম্বন করলেন। কয়েক খণ্ড কাগজে পবিত্র কোরাণের বয়েৎ বা শ্লোক লিখে তিনি ঘরের সব জানালা বন্ধ ক’রে দেওয়ালের নানাস্থানে টাঙিয়ে দিয়ে প্রেমাঙ্কুর প্রমুখ সাকরেদদের ডেকে বললেন, ‘তোমরা প্রত্যেকেই ঐ এক-একখানা কাগজের তলায় গিয়ে বোসো। ভূতের জারিজুরি আজ আর খাটবে না।’

 প্রেমাঙ্কুর বলেন, ‘খানিকক্ষণ যেতে-না-যেতেই আবার সেই ইষ্টকপাত সুরু হ’ল। কোথা থেকে কি হচ্ছে কেউ দেখতে পায় না, কিন্তু বোঁ-বোঁ ক’রে এর-ওর-তার এপাশ-ওপাশ দিয়ে ছুটে আসতে লাগল ইঁট এবং পাটকেল।’

 অবশেষে খাঁ-সাহেব নাচার ভাবে হতাশ হয়ে দুঃখিত স্বরে অদৃশ্য প্রেতের উদ্দেশে বললেন, ‘এ কেয়া হায়? রূপেয়া ফেকো বাবা, রূপেয়া ফেকো!’

 বোধ করি সে অবিশ্বাসী কাফের ভূত, কোরাণের পবিত্র বয়েৎ মানে না, তাই ইঁট-পাটকেলের বদলে টাকা নিক্ষেপ করতে রাজি হ’ল না।

 অতএব সেই বিপদজনক বাসা ত্যাগ করতে বাধ্য হলেন খাঁ-সাহেব।

৬৪