পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পেয়ালা RS মনুর অসুখ তখনও পৰ্য্যন্ত খুব খারাপ ছিল না, ডাক্তারেরা বলছেন, ভয়ের কোন কারণ নেই । আমার কিন্তু মনে হ’ল ও বঁাচবে না । ও পেয়ালাটার ইতিহাস এ বাসায় আর কেউ জানে না, অসুখের সময় যে ওতে করে কিছু খেয়েচে সে আর ফেরেনি। জানত কেবল কাকার বড় মেয়ে, সে আছে শ্বশুরবাড়ি । পেয়ালাটা একটু পরেই আবার চুপি চুপি ফেলে দিলুম-হাত দিয়ে তোেলবার সময় তার স্পর্শে আমার সারা দেহ শিউরে উঠাল-পেয়ালাটা যেন জীবন্ত, মনে হল যেন একটা ক্রর, জীবন্ত বিষধর সাপের বাচ্চার গায়ে হাত দিয়েচি, যার স্পর্শে মৃত্যু-যার নিঃশ্বাসে মৃত্যু পরদিন দিন দুপুর থেকে মনুর অসুখ বাকী পথ ধরলে, ন’ দিনের দিন মারা গেল । আমি জানতুম ও মারা যাবে। মনুর মৃত্যুর পরে পেয়ালাটা আবার কুড়িয়ে এনে ব্যাগের মধ্যে পুরে কাজে বেরুবার সময় নিয়ে গেলুম। সাত-আট ক্রোশ দূরে একটা নির্জন বিলের ধারে ফেলে দিয়ে হঁপি ছেড়ে বাঁচলুম। শোকের প্রথম ঝাপটা কেটে গিয়ে মাস দুই পরে বাসা একটু ঠাণ্ডা হয়েচে তখন । কথায় কথায় স্ট্রীর কাছে একদিন এমনি পেয়ালাটার কথা বলি । তিনি আমার গল্প শুনে যেন কেমন হয়ে গেলেন, কেমন এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে আমার দিকে চেয়ে রইলেন, মুখ দিয়ে তার কথা বেরুল না । আমি বললুম-বোধ হয় অত খেয়াল ক’রে তুমি কখন দ্যাথোনি, তাই ধরতে পােরনি-আমি কিন্তু বরাবর- ; আমার স্ত্রী বিবর্ণমুখে বললেন-বলাব একটা কথা ? আমার আজ মনে পড়ল -একটু চুপ করে থেকে বললেন