পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উইলের খেয়াল Sዓ† আমাদের গাড়ীর পাশ দিয়ে এগিয়ে গিয়ে খালি একখানা ইণ্টার ক্লাস কামরায় উঠল। শান্তিরাম চেয়ে চেয়ে দেখে বললে-তাই অবনী এখানে এল না। ইণ্টার ক্লাসের টিকিট কিনা ? আঙুল ফুলে কলাগাছ একেই বলে ! ওই অবনীদের খাওয়া জুটত না, আজ দল বেঁধে ইণ্টার ক্লাসে চেপে বেড়াতে যাচ্ছে- ভগবান যখন যাকে দ্যান, আমাদের বেঁচেকা বওয়াই সার। গাড়ী ছাড়লো। সন্ধ্যার পাতলা অন্ধকারে পাম্পিং এঞ্জিনের শেড, কেবীনঘর, ধূমাকীর্ণ কুলীলাইন, সাঁট সাঁট ক’রে দু-পাশ কেটে বেরিয়ে চলেচে, সামনে সিগন্যালের সবুজ বাতি, তারপর দু-পাশে আখের ক্ষেত, মাঠ বাবলা বন। শান্তিরামের গলার সুর শুনে বুঝলাম সে গল্প বলার মেজাজে আছে, ভাল ক’রে আলোয়ান গায়ে দিয়ে বসলাম, উৎসুক মুখে ওর দিকে চেয়ে রইলাম । শান্তিরাম বললে-অবনীকে এর আগে কখনো দেখ নি ? নিশ্চয়ই দেখেছি ছেলেবেলায়, ও আমাদের নীচের ক্লাসে পড়তো আর বেশ ভাল ফুটবল খেলতো মনে নেই ? ওর বাবা কোর্টে নকলনবিশী করতেন, সংসারের অভাব-অনটন টানাটানি বেড়েই চলেছিল। সেই অবস্থায় অবনীর বিয়ে দিয়ে বৌ ঘরে আনলেন। বললেন-কবে মরে যাব, ছেলের বৌয়ের মুখ দেখে যাই । বঁচিলেনও না বেশীদিন, এক পাল পুস্থ্যি আর একরাশ দেন ছেলের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে সংসার থেকে বিদায় নিলেন । তারপর কি কষ্টটাই গিয়েচে ওদের । অবনী পাস করতে পারলে না, চাকরিও কিছু জুটলো না, হরিণখালির বিলের এক অংশ। ওদের ছিল অনেক কাল আগে থেকে-শোলা হ’ত সেখানে, সেই বিলের শোলা ইজারা দিয়ে যে-কটা টাকা পেত, তাই ছিল ভরসা । ওদের গায়ে চৌধুরী-পাড়ায় নিধিরাম চৌধুরী বলে একজন লোক ছিল। গায়ে