পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Rt? যাত্রাবদল তাকে সবাই ডাকতো নিসু চৌধুরী। নিম্ন চৌধুরীর কোন কুলে কেউ ছিল না, বিয়ে করেছিল দু-দু’বার, ছেলেপুলেও হয়েছিল। কিন্তু টেকেনি। ওর বাবা সেকালে নিমকির দারোগ ছিল, বেশ দু-পয়সা কামিয়ে বিষয় সম্পত্তি ক’রে গিয়েছিল। তা শালিয়ানা প্ৰায় হাজার বারো-শ টাকা আয়ের জমা, আমকঁাটালের বাগান, বাড়িতে তিনটে গোলা, এক একটা গোলায় দেড়পাট দু-পাট ক’রে ধান ধরে, দুটাে পুকুর, তেজারিতি কারবার। নিসু চৌধুরী ইদানীং তেজারিতি কারবার গুটিয়ে ফেলে জেলার লোন আপিসে নগদ টাকাটা রেখে দিত। সেই নিসু চৌধুরীর বয়স হ’ল, ক্ৰমে শরীর অপটু হ’য়ে পড়তে লাগল, সংসারে মুখে জলটি দেবার একজন লোক নেই। আবার পাড়াগাযের ব্যাপার জান তো ? পয়সা নিয়ে বাড়িতে কাউকে খেতে দেওয়া-এ রেওয়াজ নেই। তাতে সমাজে নিন্দে হয়, সে কেউ করবে না। নিসু চৌধুরী তখন একবার অসুখে পড়ে দিন-কতক বড় কষ্ট পেলে-এ-সব দিকের পাড়াগায়ের জান তো ভায়া, না পাওয়া যায় রাধুনী বামুন, না পাওয়া যায় চাকর, পয়সা দিলেও মেলানো যায় না। দিন। দশবারো ভুগবার পর উঠে একটু সুস্থ হয়ে একদিন নিসু চৌধুরী অবনীকে বাড়িতে ডাকালে । বললে-বাবা অবনী, আমার কেউ নেই, এখন তোমরা পাঁচজন ভরসা। তা তোমার বাবা আমাকে ছোট ভাইয়ের মত দেখতেন, তোমাদের পাড়ায় তখন যাতায়াতও ছিল খুব। তারপর এখন শরীরও হয়ে পড়েচে অপটু, তোমাদের যে গিয়ে খোঁজখবর করবো, তাও আর পারিনে। তা আমি বলচি কি, আমাব যা আছে সব লেখাপড়া ক’রে দিচ্চি তোমাদের, নাও-নিয়ে আমাকে তোমাদের সংসারে জায়গা দেও। তুমি আমার দীনু-দার ছেলে, আমার নিজের ছেলেরই মত। তোমাকে আর বেশী কি বলবো বাবা । অবনী আশ্চৰ্য্য হ’য়ে গেল। নিলু চৌধুবীর নগদ টাকা কত আছে। কেউ অবিশ্যি জানে না, কিন্তু বিষয়-সম্পত্তির আয়, ধান-এ সব যা আছে, এ গায়ে এক