পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উইলের খেয়াল VNO) দাত প্ৰায় সব পড়ে গিয়েছিল, মাথার চুল শাদা,-নাক বেশ টিকল, অমন সুন্দর নাক কিন্তু আমি কম দেখেছি, রং না-ফর্সা না-কালো। পূৰ্ণবাবু খুব কম মাইনে পেত, এখানে কোন রকমে চালিয়ে বাড়িতে তার কিছু টাকা না পাঠালেই চলবে না-কাজেই তার পরনে ভাল জামা-কাপড় একদিনও দেখিনি । পুর্ণবাবু নিজে রোধে খেত। এক দিন তার খাবার সময় হঠাৎ গিয়ে পড়েচি-দেখি পুর্ণবাবু খাচ্চে শুধু ভাত-কোন তরকারী, কি শাক, কি আলুভাতে কিছু না-কেবল একতাল সবুজ পাতালত বাট-ওষুধের মত দেখতে- কি একটা দ্রব্য ভাতের সঙ্গে মেখে মেখে খাচ্চে । জিজ্ঞাসা ক’রে জানলাম, সবুজ রঙের দ্রব্যটা কঁাচ নিমপাতা বাটা। পূৰ্ণবাবু একটু অপ্রতিভের সুরে বললেন নিমপাতা-বাটা এত উপকারী, বিশেষ ক'রে লিভারের পক্ষে । ভাত দিয়ে মেখে যদি খাওয়া যায়-আমি আজ দু-বছর ধ’রো-আজ্ঞে দেখবেন খেয়ে শরীর বড় ঠাণ্ডা-তা-ছাড়া কি জানেন, লোভ যত বাড়াবেন ততই বাড়বে উপকারী দ্রব্য ত অনেকই আছে, ডাল ঝোলের বদলে কুইনাইন মিকাশচার ভাতের সঙ্গে মেখে দু-বেলা খাওয়ার অভ্যোস করতে পারলে দেশের ম্যালেরিয়া সমস্যার একটা সুসমাধান হয়, তাও স্বীকার করি । কিন্তু জীবনে বড় বড় উপদেশগুলো চিরকাল লঙ্ঘন ক’রে চলে এসে এসে আজ নীতি ও স্বাস্থ্য-পালন সম্বন্ধে এত বড় একটা সজীব আদর্শ চোখের সামনে পেয়ে খানিকক্ষণের জন্যে নির্বাক হয়ে গেলাম। আর এক দিন দু-দিন নয়, দু-বছর ধরে চলেচে। এ ব্যাপার ! এক দিন পূৰ্ণবাবু নিজের জীবনের অনেক কথা বললেন। কলকাতায় তাদের বাড়ি, ভবানীপুরে। র্তার একজন পিসিমা আছেন, একটু দূর-সম্পর্কের। সেই পিসিমার মৃত্যুর পরে তার সম্পত্তির উত্তরাধীকারী হবেন পূৰ্ণবাবু। কিন্তু পিসিমা । মরি-মারি করচেন আজ ত্ৰিশ পয়ত্ৰিশ বছর । পূৰ্ণবাবুর বিবাহ হয়, বাগবাজারে বেশ সম্রাস্ত বংশের মেয়ের সঙ্গে-তবে V