পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"Gło যাত্রাবদল নীচের ডাল না। কাটুলে ওপরের কচি ডাল জোর পাবে না। বল্পে, টবের গাছ না হোলে ও ডালগুলো আপনা থেকেই করে পড়ে যেতো । হিমাংশু বল্লে-তোমার সাহেব কিছু জানে না । যা ঝরে যাবার তা তো গিয়েচে, অত বড় গুড়িটা বার হয়েচে। তবে কি করে ? আর ভেঙো না । বছর তিন চার কেটে গেল। হিমাংশু গাছের কথা ভুলেচে। সে গালুডি না ঘাটশিলা। ওদিকে কোথায় জমি নিয়ে বসবাস করে ফেলেচে। ইতিমধ্যে । গাছপালার মধ্যে দিয়েই ভগবান তার উপজীবিকার উপায় করে দিলেন। এখানে হিমাংশু ফুলের চাষ আরম্ভ করে দিলে সুবর্ণরেখার তীরে। মাটীর দেওয়াল তুলে খড়ের বাংলো বাধলে। একদিকে দূরে অনুচ্চ পাহাড়, নিকটে, দূরে শালবন, কঁাকর মাটীর লাল রাস্তা, অপূর্ব সুৰ্য্যোদয় ও সূৰ্য্যস্ত। ফুলের চাষে সে উন্নতি করে ফেল্পে খুব শীগৃগীর । ফুলের চেয়েও বেশী উন্নতি করেচে। চীনা ঘাস ও ল্যাভেণ্ডার ঘাসের চাষে । এই জীবনই তার চিরদিনের কাম্য ছিল, ও জায়গা ছাড়া সহরে আসতে ইচ্ছেও হোত না । বছর দুই কাটুলো আরও, ইতিমধ্যে সে বিবাহ করেচে, সস্ত্রীক ওখানেই থাকে। আজ তিন দিন হোল সে কলকাতায় এসেচে। প্ৰায় পাচ ছ’ বছর। পরে । কাজকৰ্ম্ম সেরে কেমন একটা ইচ্ছে হোল, ভাবলে-দেখি তো সেই সাহেবের বাড়ীতে আমার সেই গাছটা আছে কি না ? বাড়ীটা চিনে নিতে কষ্ট হোল না। কিন্তু অবাক হয়ে গেল বাড়ীর সে শ্ৰী আর নেই। বাড়ীটাতে বোধ হয় মানুষ বাস করেনি বছর দুই-কি তারও বেশী । উঠোনে বন হয়ে গিয়েচে । পৈঠাগুলো ভাঙা, বাতাবী নেবু। গাছে মাকড়সার জাল, বারান্দার রেলিংগুলো খসে পড়েচে । তার সেই এরিকা পামটা আছে, কিন্তু কি চেহারাই হয়েচে । আরও বড় হয়েচে বটে। কিন্তু সে তেজ নেই, শ্ৰী নেই,