পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(8 যাত্রাবদল মধু লাহিড়ী নিজের বাড়ী থেকে তামাক সেজে হুকো হাতে নিয়ে বটতলায় এসে পৌঁছলেন। সবাই জানে মধু লাহিড়ী সম্প্রতি কিছু টাকা হাতে পেয়েচেন র্তার শ্বাশুড়ীর মৃত্যুর পরে, গত কাৰ্ত্তিক মাসে। এজন্য মধু লাহিড়ীর ওপর কেউ সন্তুষ্ট নয়, মনে মনে সবাই তেঁাকে হিংসে করে । মধু বয়োজ্যেষ্ঠ হারাণ রায়ের হাতে হুকো দিয়ে বল্লেন : কাল রাত্রে এক কাণ্ড হয়েচে আমার বাড়ী, জানো না বোধ হয় ? রান্নাঘরের জানলাব পাশে অনেক রাত্তিরে কে একজন দাড়িয়েছিল--রাম ছাদ থেকে দেখতে পায় । সে বাইরে এসেছিল, ছাদের নীচেই ওপাশে রান্নাঘর। ধপধাপে জ্যোৎস্না রাত, দেখে যে কালোমত কে একজন জানলাব গরাদে ধবে দাড়িয়ে। সে ছেলেমানুষ, চেচিয়ে উঠতেই আমাব স্ত্রীর ঘুম ভেঙেচে । আমারও ঘুম ভেঙেচে। সবাই ছাদে বাব হয়ে দেখি, কোথাও কিছু নেই-কিন্তু রান্নাঘরের পেছনে সেওড়াগাছগুলোব মধ্যে যেন কি শব্দ হচ্ছে । সারা রাত জেগে কাটিয়েচি ! গায়ে বাস কবা ভার হোল দেখচি ! মধু লাহিড়ীর এ-কথায় কেউ সন্তুষ্ট হোল না। কেউ কথাটা বিশ্বাসও করলে না । সবাই ভাবলে, হাতে টাকা হয়েচে, তাই লোককে জানানো যে আমার বাড়ী চাের যাতায়াত করে রাত্রে-এটা বড়মানুষী দেখানো একরকম। হারাণ রায় মধুৰ হাত থেকে হুকো নিয়েছিলেন, তিনি চক্ষুলজ্জায় পডে বল্লেন : তুমি আবার বাস করে বঁাশবাগানের মধ্যে। রাত-বেরাত খুব সাবধান থাকবে, কাল পড়েচে বড়ই খারাপ । মধু লাহিড়ী বল্লেন ; উঠে যাবে উঠে যাবো। কবি, কিন্তু উঠে যাই বা কোথায় ? একবার তো ভেবেছিলাম, শ্বশুববাড়ী বলাগড় গিয়ে বাস করি । কিন্তু সে বেজায় ম্যালেরিয়ার জায়গা-আমাদের এখানকার চেয়েও বেশী । তাই দাদা বারণ কল্পে, দুই ভায়ে যে ক'দিন বেঁচে থাকি, এক জায়গাতেই থাকি, পৈতৃক ভিটেটাতে আলো দি দুজনে। তাই