পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাইশ বছর খববের কাগজের অফিসে সন্ধ্যার পর আড চলছিল । “তরুণ’ শব্দটার ওপর ভয়ানক জোর দিয়ে কথা বলা তখন দিনকতক খুব চ’লেছিল--সেই সময়কার ব্যাপার। তরুণ-সাহিত্যের ভবিষ্যৎ, তারুণ্য, তরুণ দৃষ্টি-ভঙ্গি, তরুণ সমিতি, তরুণের অভিযান, তরুণের জয়যাত্ৰা-মাসিক পত্রিকা ও কথাসাহিত্য তখন তরুণ-বায়ুগ্ৰস্ত । ওদিকে পরশুরাম তখন ‘কচি সংসদ’ গল্প লিখলেন তা নিয়ে দুটাে দলের স্বষ্টি হােল, একজন বললে-আঃ কি ঠোকাই ঠুকেচে । আর একজন বললে—যাদের নিজেদের জীবনের পুজি। বহুকাল ফুরিয়েচে, যাদের প্রাণের তারে মরচে ধরেচে, তারা তরুণের মনকে বুঝবে কেমন করে ? সমস্ত মহী গ্ৰাস করতে ছুটেছে তরুণের জয়রথ চক্র, তার উদাম, অশান্ত বেগের সামনে দাঁড়াবার ক্ষমতা ধরে, তাদের সঙ্গে সমান তালে পা ফেলে চলাবার স্পৰ্দ্ধা রাখে। কোন ওল্ড ফসিল ?- ইত্যাদি ইত্যাদি। মোটের ওপর শেষের দলটাই বেশী পুষ্ট-তরুণের বিরুদ্ধে যারা কথা বলছিল চেয়ে দেখলুম। তারা সকলেই মধ্যবয়সী, অপর পক্ষে তরুণ ও প্রৌঢ় দুইই আছে -এবং স্বয়ং সম্পাদক যিনি, ষাট বৎসরের বৃদ্ধ হলেও তিনি ছিলেন তরুণের সপক্ষে । কাগজের আপিস থেকে বার হয়ে এসে একটা পার্কের বেঞ্চিতে বসলুম। মনটা খারাপ হ’য়ে গেল। সত্যিই তরুণেরাই জয়ী-কিন্তু সে বয়সটাকে বহুকাল হারিয়েচি। মাথার চুল ছ। আন আন্দাজ পাকা, পরিচিত ছোকরারদল সামনে বিড়ি-সিগারেট খায় না, হঠাৎ সামনা সামনি হোয়ে গেলে বিড়ি মুখে থাকলে তাড়াতাড়ি ফেলে দেয় । সমীহ করে কথা বলে-আর বয়োবৃদ্ধ লোকের পরিচয় দিতে গেলেই বলে,-“আজ্ঞে তার বয়েস হয়েচে, এই প্ৰায় আপনার বইসী । হবেন।” তা সে কি জানে চল্লিশ-কি জানে পঞ্চাশ-আমার বয়েসী, তাও