পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যাত্রাবদল بb\ ‘প্রায়”-অৰ্থাৎ আমিই বড়। কারণ কুড়ি, বাইশ, পাঁচিশ বয়সের ছোকরার চল্লিশে আর পঞ্চাশে বিশেষ কোনো তফাৎ দেখে না । এদিকে বাড়ীতেও বড় সংসার, সেখানে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মুখে “বাবা” “বাবা’ অনবরত শুনতে শুনতে মনটাও অনেকটা গভীর প্রবীণত্বের দিকে ঝুকে চলেচে বৈকি। ছোট মেয়েটা কাছে এলেই বলে-বাবা তোমার পাকা চুল তুলে দেবো ? না, মনটা খারাপ হবারই কথা বটে। রাত ক্ৰমে বেশী হোল, পার্কের মধ্যে কুলপীবরফ ওয়ালা হেঁকে যাচ্চে, মোড়ের মাথায় বেলফুলের মালা বিক্রি হচ্চে, রাস্তায় লোক চলাচল ক্ৰমে কমে আসচে। জ্যোৎস্না-রাত, চাদ ভাঙ্গা ভাঙ্গা মেঘের মধ্যে লুকোচুরী খেলচে। কত বছর বয়সের মানুষকে ঠিক তরুণ বলা চলে ? উনিশ থেকে বত্ৰিশ না। আঠারো থেকে আটাশ, না কুড়ি থেকে পাঁচিশ ? এবয়েস একদিন আমারও ছিল -ওর চেয়েও কম ছিল । কিন্তু তখন কেউ বলে দেয়নি যে আমি তরুণ বা তার জন্যে একটা কিছু হয়েচে । দুর্ভাগ্যের বিষয় তার উল্টোটাই শুনে এসেচি চিরকাল। কখনও বুঝতে পারিনি যে আমার বয়স অল্প । সেই কথাটাই আজ রাত্রে আমার বেশী করে। মনে এল । ছেলেবেলায় আমি ছিলাম খুব রোগ শীর্ণ-অসুখে ভুগতম বছরে ন” মাস । হাতে তাবিজ-কবজি, গলায় আমড়ার আঁটি, কোমরের ঘুনাসিতে বাদুড় নখসমস্ত দেহে নানা ধরণের বাধা ও গণ্ডী-মৃত্যু যাতে হঠাৎ ডিঙ্গিয়ে এসে আমাকে নিয়ে না পালায় । এই কারণে ইস্কুলে ভৰ্ত্তি হতে হয়ে গেল দেৱী। যে ক্লাসে গিয়ে ভৰ্ত্তি হলুম, সে ক্লাসের মধ্যে আমিই বড়। সকলে আমাকে ডাকতে লাগল-“কানু-দা” বলে। কিন্তু প্ৰথমে ততটা বুঝতে পারিনি যে আমার বয়েসটা এমন বেখাপ্পা গোছের বেশী। একদিন হোল কি, তখন মাস দুই ভৰ্ত্তি হয়েচি, মামারবাড়ী