পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ডানপিটে SY মনে বকুনি, ইহাই দাড়াইল উপসর্গ। নয় তো অন্য সবদিকে কোনো অপ্ৰকৃতিস্থতার চিহ্নও নাই, সংসারের কাজ-কৰ্ম্ম, স্বামী পুত্রের যত্ন-কিছুরই মধ্যে কোন ক্ৰটি নাই । সতীশ বড় দমিয়া গেল। হাতে পয়সার জোর ছিল, কিছুদিন প্র্যাকটিস বন্ধ রাখিয়া এখানে-ওখানে ঘুরাইয়া আনিল সকলকে, পূর্ববঙ্গে শ্বশুরবাড়ী গিয়া রহিল। কিছুদিন, কলিকাতায় আসিয়া ডাক্তার-কবিরাজ দেখাইল, তখনকার মত উপশম না হইল যে, এমন নয়। কিন্তু দেশে আসিয়াই ‘যথা পূৰ্ব্বং তথা পরং।” বড় ছেলেটির বয়স বারো, সে তিন ক্রোশ দূরবর্তী রামনগরের হাই স্কুলের বোর্ডিং-এ থাকিয়া পড়াশুনা করিতেছিল । ছোট ছেলেটিকেও এবার সতীশ সেখানে রাখিয়া দিল । এ-সব বাংলা ১৩১২ সালের কথা । তারপর যেমন অন্য পাঁচজন মানুষের দিন যায়, সতীশের দিনও তেমন ভাবে যাইতে লাগিল । রোগী দেখা, টাকা রোজগার, সংসার প্রতিপালন । ছেলেবা বড় হইল। বড় ছেলেটিব নাম বিনয়, সে আই-এস-সি পাশ করিয়া মেডিকেল কলেজে ডাক্তারী পড়িতে লাগিল। সতীশ পুত্রবধুর মুখ দেখিবার জন্য এই সময় তাহার বিবাহও দিল । ছোট ছেলে তখনও স্কুলের ছাত্র, সে তার দাদার চেয়েও মেধাবী এবং সুবুদ্ধি। ইতিমধ্যে নানাস্থান হইতে তাহার বিবাহের সম্বন্ধ যাতায়াত করিতেছিল । এ সব গেল বাহিরের ব্যাপার। সতীশের মনের বড় অদ্ভুত পরিবর্তন হইতে লাগিল ধীরে ধীরে । পনেরো-ষোল বৎসর ধরিয়া সে এই গ্রামে এবং পার্শ্ববৰ্ত্তী অঞ্চলে ডাক্তারী করিতেছে-এই পনেরো ষোল বৎসরের জীবন নিতান্ত একঘেয়ে, রোগী দেখা, খাওয়া, ঘুমানো-ভূষণ দ-এর দোকানে বসিয়া মাঝে মাঝে গল্প