পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ডানপিটে ܠ ܐ গোলমাল শুনিয়া রাণা বাহাদুর নিজে আসিয়া ব্যাপারটা অন্যভাবে মিটাইয়া দিলেন। চাকুরি যাওয়া তো দূরের কথা, সেই মাসেই সতীশের দশ টাকা বেতন বৃদ্ধি হইয়াছিল। • • • গত পনেরো বৎসর ধরিয়া সতীশ তো অনবরত সকলের কাছেই কাশী আর নেপালের গল্প করিয়া আসিতেছে । তাহার সমবয়সী লোকেদের কাছে, দেশের বন্ধুদের কাছে, রোগী ও রোগীদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে—কিন্তু সে শুধু বাহাদুবী লাইবার জন্য, সে কত দেশ বেড়াইয়া কত অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিয়াছে, কত বড়মানুষী করিয়াছে, কত বড় বড লোকের সমাজে মিশিয়াছে।--তাহা সাড়ম্বরে জারি করিবার জন্য । এবার কিন্তু সে সব জীবনেব স্মৃতি একটা অস্পষ্ট বেদনার মত তাহার মনে আসিয়া উদয় হইতে লাগিল—কি যেন একটা জিনিষ চিরকালের জন্য হারাইয়া গিয়াছে, আর কোনো দিন তাহার সাক্ষাৎ মিলিবে না, সতীশের এই এত বড় পিসারের বিনিময়েও না, সঞ্চিত অর্থের বিনিময়েও না, কোনো কিছুতেই না । துர் এ গ্রামের জীবনও ক্রমে নিরানন্দ হইবা উঠিতে লাগিল। সতীশ গ্রামে আসিয়া এ গামে যে কয়টি সুখের সুখী, দুঃখের দুঃখী প্ৰবীণ আত্মীয় স্থানীয় লোক পাইয়াছিল, এ পাড়ায় অম্বিকা রায়, শ্যামাকান্ত গাঙ্গুলী-ও পাড়ার বৃদ্ধ গোসাই মশায়-এ রা একে একে মারা গেলেন । আষাঢ় মাসের শেষে যাদুরাম স্তাকরার রোগ শয্যা পার্থে সতীশের ডাক পড়িল । যাদুরামের বয়স হইয়াছিল প্ৰায় পাঁচাত্তর বৎসরের কাছাকাছি, গত দশ বৎসর অর্থাভাব ও দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধ করিয়া যাদুরামের স্বাস্থ্য একেবারে ভাঙিয়া, পড়িয়াছিল। সতীশ বুঝিল এই বয়সে, তার উপর ডবল নিউমোনিয়া রোগ,