পাতা:যুগান্তর - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তদশ পরিচ্ছেদ Red “সুরেশকে সঙ্গে করিয়া সন্ধ্যার সময়ে একবার এস, একটু বিশেষ কাজ আছে।” নবীনচন্দ্র রাঙ্গা মারি মুখে শুনিয়া গেলেন, যে, বৃদ্ধ তাঁহাদের পিতার গচ্ছিত সমুদায় ধন তাহাদিগকে অৰ্পণ করিবেন, এরূপ সংকল্প করিয়াছেন। বসুজ মহাশয়ের পীড়ার সময় নবীনচন্দ্ৰ দুই দিন স্ট্রীয় জ্যেষ্ঠ সহোদরকে ডাকিতে গিয়াছিলেন, তিনি তখন আসেন নাই, কিন্তু যখন শুনিলেন যে টাকা কড়ি বুঝাইয়া দিবেন, তখন আর আপত্তি রহিল। না। র্তাহারা উভয়ে সায়ংকালে উপস্থিত হইলে, বৃদ্ধ বলিলেন, “তোমাদের পিতার গচ্ছিত সুদে আসলে প্ৰায় ২২ বাইশ হাজার টাকা আমার নিকট আছে । আমি ক্ৰোধ করিয়া তাহা তোমাদিগকে জানিতে দিই নাই ; কিন্তু আমার বঞ্চিত করিবার অভিপ্ৰায় ছিল না । সেই টাকা ১ হাজার করিয়া দুই ভাইয়ে গ্ৰহণ করা ; আর আমি এই বাড়ীর দাম ১৬ ষোল হাজার ধরিয়াছি, সেই ন্যায্য দাম। আমার অংশের ৮ হাজার বাদে তোমাদের দুই ভাইকে আট হাজার দিতেছি। বাড়ীটা আপাততঃ আমারই থাক। কারণ, আমাদের এত বিষয়ে মতান্তর ঘটেছে যে, এক বাড়ীতে বনিবনাও হওয়া সম্ভব নয় ; আর বাড়ীটা প্রাচীর দিয়া ভাগাভাগি করলেও একেবারে বাসের অযোগ্য হয়ে যাবে । অতএব একজনের হাতে থাকাই ভাল।” এই প্রস্তাবে উভয় ভ্রাতা সম্মতি প্ৰকাশ করিলেন । তৎপরে একটা দিন স্থির হইল, যে দিন লেখা পড়া করিয়া টাকা দেওয়া হইবে। নবীন বলিলেন, “জেঠা মশাই, আমি এখন সহরের বাহিরে চাকুরী লইয়া যাইতেছি ; আমার টাকার প্রয়োজন নাই , আমার টাকা আপনার নিকটেই থাক্‌ ; ঐ টাকার সুদ মাসে মাসে রাঙ্গা মাকে দেবেন, তিনি দান ধ্যান করবেন।” বৃদ্ধ তথাপি টাকাঙুলি লইবার জন্য অনেক অনুরোধ করিলেন, নবীন লাইতে স্বীকৃত হইলেন না।