পাতা:যুগান্তর - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Vo যুগান্তর প্রারম্ভেই একজন রিফরমার বা সংস্কারক দলভুক্ত লোক হইয়াছিলেন, তাহার কোন সন্দেহ নাই। তিনি ইংরাজী শিক্ষার গুণে উদারভাবাপন্ন হইয়াছিলেন ; দেশ-প্ৰচলিত কোন প্রকার কুসংস্কার তঁহার মনে ছিল না। ; এবং ইহা দেখাইবার জন্যই বোধ হয়, দশজন যুবক একত্ৰ হইলে সর্বসমক্ষে সাহস করিয়া সুরাপান করিতেন। সে সময়ে সুরাপান করাটা রিফরমারদিগের একটা প্ৰধান লক্ষণ ছিল । নন্দকিশোর বন্দ্যোপাধ্যায় অতিশয় মিতাচারী লোক ছিলেন। তিনি সহোদরের এই রিফরমেশনের সংবাদ পাইয়া তাহাকে অনেক তিরস্কার করেন। ইহা লইয়া দুইভ্রাতাতে বিবাদ ও কিছুদিন মনান্তরও ঘটিয়াছিল। অবশেষে হরিকিশোর স্বীয় কৰ্ম্মস্থলে গমন করেন ও নন্দকিশোরের মৃত্যু হয়। সৰ্বকনিষ্ঠ যুগলকিশোর বন্দ্যোপাধ্যায় ; ইনিও একজন শিক্ষিত ব্যক্তি। তবে মধ্যমের ন্যায়। যশস্বী হইতে পারেন নাই। ইনি সম্প্রতি কলিকাতায় জি, টি, সার্ভে অফিসে, একশত টাকা বেতনে একটী কৰ্ম্মে নিযুক্ত আছেন । পঠদ্দশাতে রিফরমেশন বিষয়ে ইনি মধ্যমের অনুগামী হইয়াছিলেন ; অর্থাৎ গোপনে একটু একটু সুরাপান ও অখাদ্য ভোজন করিতে শিখিয়াছিলেন । নন্দকিশোরের জীবদ্দশাতে রিফরমেশনের বেগটা কিছু সংযত ছিল । তিনি পরলোকগত হইলে যুগলকিশোর অবাধে ও অসঙ্কোচে নিজের রুচি ও প্ৰবৃত্তি অনুসারে চলিতে আরম্ভ করিয়াছেন। তঁহার কলিকাতার বাসার বৈঠকখানাতে প্ৰায় প্রতিদিন রাত্রেই কতকগুলি সমবয়স্ক বন্ধুর সমাগম হইয়া থাকে। সকলেই ইংরাজী-শিক্ষিত, সকলেই সংস্কারক ও স্বজাতি-বিদ্বেষী। ইংরাজ জাতির মত জাতি নাই, শেক্ষাপীয়ারের মত কবি নাই, বেকনের মত জ্ঞানী নাই, নিউটনের মত তত্ত্ববিদ নাই, ইংরাজী সুরার মত আমোদ দিবার জিনিষ নাই, এবিষয়ে ঐ যুবকদলের সকলেরই মতের অদ্ভুত একতা। তঁহারা