পাতা:যৌবনের বজ্রনির্ঘোষ - প্রবীর ঘোষ.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অধ্যায়: দুই


আমার প্রথম কলেজ

বাবার সঙ্গে রেজাল্ট হাতে মতিঝিল কলেজে গেলাম ভর্তি হতে। ভর্তি হবার জন্য ফর্ম ফিল-আপ করে টাকা জমা দেবো, হেডক্লার্ক টাকা জমা না নিয়ে আমার রেজাল্ট হাতে দ্রুত বেরিয়ে গেলেন। তারপর ফিরে এসে তিনি বাবাকে বললেন, আপনি ছেলেকে নিয়ে প্রিন্সিপালের ঘরে যান। প্রিন্সিপাল ডেকেছেন।

 তখন প্রিন্সিপাল ছিলেন ডি পি আচার্য। তিনি বাবাকে বসতে বললেন। বাবা বসলেন, আমি দাঁড়িয়ে। এরপর বললেন, এই রেজাল্ট নিয়ে তো ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াতে পারেন, এখানে কেন ভর্তি করতে চাইছেন? (তখন জয়েণ্ট এণ্ট্রান্স দিয়ে ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হতে হত না। রেজাল্ট দেখেই ভর্তি নিয়ে নিত।)

 বাবা খুব উৎসাহিত হয়ে উঠেছিলেন। আমি তাঁর উৎসাহে জল ঢেলে দিলাম। বললাম, বাবা রিটায়ার করেছেন। আমরা চার বোন এক ভাই। এখন ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াবার সামর্থ্য বাবার নেই। আমি এখানেই পড়ব।

 প্রিন্সিপাল বললেন, তুমি বাড়ি যাও। ভাবো। সাতদিন পরে এলেও তোমাকে ভর্তি নিয়ে নেব। বরঞ্চ ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লে তোমার কেরিয়ার তৈরি হয়ে যাবে। তার সঙ্গে স্কলারশিপ তো পাবেই।

 দমদম মতিঝিল কলেজেই ভর্তি হলাম। দোতলা কলেজ। বড় গেট দিয়ে কলেজ কম্পাউণ্ডে ঢুকলেই বাঁদিকে একটা বড় মাঠ। ডানদিকে ‘এল’ প্যাটার্নের দোতলা বড় বিল্ডিং। বিল্ডিং-এর রং হলুদ। এখনও হলুদ রং-ই আছে।

 সারি সারি বড় বড় ঘর। একতলায় মাঠের পাশে ইউনিয়ন রুম। দোতলায় প্রিন্সিপালের ঘরের পাশে প্রফেসরদের কমনরুম। ল্যাবরেটরিটা একতলায়। একটা ক্যাণ্টিন ছিল। সেখানে রুটি, ঘুগনি, ওমলেট, চা, বিস্কুট ইত্যাদি পাওয়া যেত।

 এই বাড়িতেই সকালে মতিঝিল গার্লস কলেজ হত। আমরাই ‘প্রি-ইউনিভার্সিটি’র ফার্স্ট ব্যাচ। আমাদের ক্লাসের ছাত্রসংখ্যা প্রায় শ’খানেক হবে।

১৭

যৌবনের বজ্রনির্ঘোষ-২