পাতা:রংপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (সপ্তম ভাগ).pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩১৯, ৩য় সংখ্যা ] ন্যায় ও বৈশেষিক দর্শনে পরমাণু তত্ত্ব SSN) বিভক্ত না হইত, তবে কস্তারীর তাদৃশ অণু কোনরূপে প্রসিদ্ধ হইতে পারিত না। আর যদি ঐ সকল অণু ত্ৰসরেণু হইত, উহা ও গবাক্ষদ্বারে বা ঐ রূপ অণুবীক্ষণ দ্বারা প্ৰত্যক্ষ হইত। যখন ঐ সকল অণুর প্রত্যক্ষ হয় না, তখন ত্ৰসরেণুর বহু অংশে বিভাগ স্বীকার করিতে হইবে । এ পৰ্য্যন্ত পরমাণু সম্বন্ধে যে যৎকিঞ্চিৎ পরিচয় দেওয়া গেল, তাহাতে ইহাই সিদ্ধান্ত হইল,—জন্য দ্রব্যের যে মূল অবয়ব অর্থাৎ যাহার আর অবয়ব নাই, তাহাকেই ন্যায় ও বৈশেষিক দর্শনে পরমাণু বলে। এতাবতা পরপরমাণুর বিষয় সংক্ষেপে বৰ্ণিত হইল, এইক্ষণ তাহার বিভাগ ও কাৰ্য্য বলা যাইতেছে। পরমাণু সকল চারি ভাগে বিভক্ত-ভৌম, জলীয়, তৈজস ও বায়বীয় । যখন জগৎ সৃষ্ট হয়, তখন প্রথমতঃ অদৃষ্ট কারণ বশত: বায়বীয় পরমাণুতে ক্রিয়। জন্মে, ঐ ক্রিয়া বায়বীয় পরমাণুকে পরস্পর সংযুক্ত ক4ে,—এইরূপে সংযুক্ত হইলে দ্ব্যগুকি উৎপন্ন হয়, ক্রমে ত্র্যণুক, চতুরাণুক উৎপন্ন হইতে হইতে বায়ুর উৎপত্তি হয় । এই প্ৰণালীতে অগ্নি, জল প্রভৃতির সৃষ্টি হইয়া থাকে। প্ৰলয়কালে এইরূপে পরমাণু বিভক্ত হইয়াই ভুত সকলের নাশ হসু, কেবল পরমাণুমাত্র অবস্থিত থাকে । উহাই মহর্ষি কণাদের মত। নৈয়ায়িকের বলেন, আকাশ যেরূপ অসীম ও অনন্ত, পরমাণু সেইরূপ অগণনীয়, অসীম ও অনন্ত। মহাপ্ৰলয়কালে জন্য পদার্থ সকলের ধ্বংস হইলে সে সকলের পরমাণু আকাশগর্ভে নিহিত বা লুক্কায়িত থাকে। যখন স্বষ্টি আরম্ভ হয়, তখন ঐ সকল পরমাণু জীবাত্মার প্রভাবে সবল হয় ; যখনই সবল হয়, তৎক্ষণাৎ সংযুক্ত হইতে থাকে ; ক্ৰমে দ্ব্যপুক ত্ৰসরেণু প্রভৃতিরূপে সমুদয় জড় জগৎ উৎপন্ন হয়। পূর্বেই বলিয়াছি,-অন্যান্য দর্শনে পরমাণু বলিয়া কোন পদার্থ স্বীকৃত হয় নাই-উহাতে প্ৰকারান্তরে সৃষ্টি বর্ণিত আছে। বেদান্তদর্শনে পরমাণুর কারণবাদ নিরাকৃত হইয়াছে। শঙ্করাচাৰ্য্য বলেন, পরমাণুরাশিহয়। প্ৰবৃত্তিস্বভাব, না হয় নিবৃত্তিস্বভাব। পরমাণুরাশি প্ৰবৃত্তিস্বভাব হইলে প্ৰলয় হইতে পারে না-নিবৃত্তিস্বভাব হইলে সৃষ্টি হইতে পারে না,-হত্যাদি বহুতর দোষ সকল প্ৰদৰ্শন করিয়া পরমাণুর কারণবাদ নিরস্ত করিয়াছেন। সাঙ্খ্যাচাৰ্য্য পরমাণু স্বীকার না করিয়া পঞ্চতন্মাত্র স্বীকার করিয়াছেন। পঞ্চতন্মাত্র হইতে স্থূল ভূতের উৎপত্তি হয়, একথা বলিয়াছেন । জৈমিনি ও পতঞ্জলি যোগ ও কৰ্ম্মকাণ্ড লইয়া ব্যস্ত ; এজন্য র্তাহাদের বিরচিত দর্শনে সৃষ্টির তত্ত্ব বিশেষরূপ বৰ্ণিত হয় নাই । পরমাণুর অনুমান । এতদ্দেশীয় নব্য নৈয়ায়িকেরা যে প্রকারে পরমাণুর অনুমান করিয়াছেন, তাহার উল্লেখ করা যাইতেছে। গবাক্ষদ্বারে রবিকিরণসম্বন্ধে যে সুন্ম অণু দেখা যায়, উহাকে ত্ৰসরেণু বলে ; কোন কোন নব্য গ্ৰন্থকার বলেন, এই অণু ছয় পরমাণুর সমষ্টি, উহার তিন) অংশের এক অংশ