পাতা:রংপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (সপ্তম ভাগ).pdf/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S88 রঙ্গপুর-সাহিত্য-পরিষৎ পত্রিকা দেখিতে লাগিলেন । বিধবা ব্ৰাহ্মণীর বেশে মনসা বিপুলাকে বৃথা শাপ দিবার জন্য নিকটে আসিলেন । বিপুল স্নানান্তে ব্ৰাহ্মণীকে পূজা না করিয়া মঙ্গলচণ্ডীর পূজা করিলে, বিধবা ব্ৰাহ্মণী কোপ করিয়া বিপুলাকে অভিসম্পাত করিলেন যে, কালরাত্রে তাহার স্বামীকে পদ্মার কালনাগে দংশন করিবে । চন্দ্ৰধর এই সমস্ত দেখিয়াও এই কন্যাই বিবাহ করাইবেন, সংকল্প করিলেন। লৌহঘর নিৰ্ম্মাণ করাইয়া কালরাত্ৰে লক্ষ্মীধারকে তথায় রাখিলে সৰ্পে কিছুই করিতে পরিবে না, এই মনে করিয়া বিপুলার পিতার সহিত আলাপ * করিয়া সম্বন্ধ স্থির করিলেন । কেশাই কামার আসিয়া লোহার মাঞ্জস গড়িয়া দিল । পদ্মার ভয়ে ও কৌশলে, কেশাই কামার, “মাঞ্জসের কোণে ছিদ্র রাখিল গোপনে।” যথাসময়ে বিবাহ সুসম্পন্ন হইল। কালরাত্রে বীরকন্যাকে লৌহ গৃহে রাখা হইল। পদ্মার কৌশলে কালনাগ লৌহগৃহে গিয়া লক্ষ্মীধারকে দংশন করিল। লক্ষ্মীধরের জীবনপ্রদীপ নিভিয়া গেল। শ্বশুর শ্বাশুড়ীর অনুমতি লইয়া, বেহুলা মৃতপতির’ শবসহ, কলারভেলায় চড়িয়া স্বামীর পুনৰ্জীবন কামনায় দেবপুরে চলিলেন। নানা বাধা বিস্ত্ৰ অতিক্ৰম করিয়া বহুদিন পর ভেলা দেবপুরের নিকটে উপস্থিত হইল। সম্মুখে ধৰ্ম্মসেতু । দুইদিকে फूशे?ि ८*|ांनांद्र খুটি, মধ্যে একটি চুল, নীচে গভীর শূন্য । বিপুল স্বীয় ধৰ্ম্মের বলে এই সেতু হাটিয়া পার হইলেন, এবং দেবপুরে স্বর্গে প্ৰবেশ করিলেন । শাপ ভ্ৰষ্টা বিদ্যাধরী উদ্যা, মৰ্ত্তলোকে বিপুলারূপে জন্ম গ্ৰহণ করিয়াছিলেন। তাই যখন তিনি স্বৰ্গে গেলেন, সকল বিদ্যাধরীরা আসিয়া তাঁহাকে ঘেরিয়া দাড়াইল। নৃত্যের সজাদি লইয়া বিপুল। কৈলাসে উপস্থিত হইলেন । বিপুলার নৃত্যগীতে মহেশ্বর মুগ্ধ হইয়। সকল দেবতার সভা আহবান করিলেন। দেবীসভা বিপুলার নৃত্যগীতে তুষ্ট হইয়া বর দিতে চাহিলে, বিপুল স্বীয় কাহিনী বলিলেন, এবং পদ্মার নিকট হইতে মৃতস্বামী ও ছয় ভাস্কর, ওঝা ধন্বন্তরী, ও শ্বশুরের ধন জনসহ নিমজ্জিত চৌদ্দডিঙ্গা পাইবার দাবী করিলেন। বিচার আরম্ভ হইল। সাক্ষী প্রমাণ 。छ्° করা হইল। মুন্দই বিপুলাসুন্দরীর পক্ষের প্রধান চারি সাক্ষী, দেব মহেশ্বর, জগন্মাতা চণ্ডী, দেবরাজ ইন্দ্ৰ, ধৰ্ম্মরাজ যম। সুরগুরু বৃহস্পতি বিচারক। দেবসভা জুরী। শিব बूदाश्ग्रा বলিলেন, “চন্দ্রধর কর্তৃক অপমানিত হইয়াও, তাহার নিকট হইতে পূজা পাইবার জন্যই মনসা উষা অনিরুদ্ধকে মৰ্ত্তে বিপুল লক্ষ্মীধারীরূপে জন্মাইয়াছে। মনসার হাতে ইহাদের জন্মমৃত্যু। যে জন্মাইতে পারে, সে মারিতেও পারে, এবং মারিয়া পুনজীবন দান করিতেও পারে। যদি চন্দ্ৰধর লক্ষ্মীধরের পুনর্জীবন কামনা করে, তবে তাঁহাকে মনসার পূজা করিতেই হইবে।” দেবসভা ও এই যুক্তিতে সায় দিলেন। দেবীসভার আদেশে মনসা , লক্ষ্মীধারকে পুনর্জীবিত করিলেন। মনসার মনে খটকা রহিল। তাই তিনি বিনয় সহকারে পিতা মহাদেবকে বলিলেন, “সংমা ( চণ্ডী ) যদি অকপটে চন্দ্ৰধরকে আদেশ করেন, তবেই সে আমাকে পূজা করিবে, নতুবা নহে।” ইহা শুনিয়া মহাদেব পদ্মাকে চণ্ডীর হস্তে সমর্পণ করিলেন । চণ্ডী পদ্মার কপালে চুম্বন করিয়া কোলে তুলিয়া বলিলেন,—