পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>Q> সে হবে না, সর্দার । সন্ধে বেলায় মদ খেয়ে আমরা উৎপাত করি কিন্তু উপদেশ দিতে এলে তার চেয়েও হাঙ্গাম হবে, নরহত্যা করতেও বাধবে না । আরে ফাগুলাল, চুপ চুপ! অস্থানে অসহিষ্ণু হবার দোষ এই যে তাতে আরো বেশি সহ্য করতে হয় । শুনলে ত নাতনী ! তোমাদের পুরুষগুলো— সর্দারদাদা, মাঝে মাঝে এদের সবাইকে ঘরের হাওয়া খাইয়ে আন তাহলে সব নষ্টামি সহজে সারবে। গোসাইয়ের উপদেশে উল্টো হবে। পাকা কথা বলেচ ! মেয়ে মানুষ, তোমাদের সহজ বুদ্ধিতে সব সমস্যা সহজ হয়ে আসে। তোমার কথা শুনে মনে পড়চে, ঐ যে রঘুনাথের ব্যামো হল, তাকে যতই বৈদ্যের বড়ি খাওয়ালুম তার রোগ বেড়ে উঠতে লাগল ; তার দ্বারা আমাদের আর কোন কাজ হবে না হিসেব করে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিলুম— এখন খবর পাচ্চি সে সম্পূর্ণ সেরে উঠেচে। গোসাইয়ের উপদেশও সেই বৈদ্যের বড়ি। এই যে বলতে বলতেই গোসাইজি এসে পড়েচেন। প্রভু, প্রণাম । আমাদের এই কারিগরদের মন মাঝে মাঝে অশান্ত হয়ে ওঠে, এদের কানে ९ দেখেচি,– এমন হয়েচে যে, সাদা চালে চলতেও পা কাপে । চন্দ্রা সর্দার দাদা ! সর্দার কি নাৎনী ! চন্দ্রা চেয়ে দেখ, তোমাদের মানুষগুলো কি মানুষ আছে ? অন্ধকারে সারাদিন ভূতের মত খাটে, দিন গেলে সারা সন্ধে প্রেতের মত মেতে বেড়ায়। দেখে দয়া হয় না ? সর্দার বল কি ? মানুষ নষ্ট হয়ে যাচ্চে, দুঃখ হয় না ? খুবই উদ্বিগ্ন হয়েচি । মনিবকে মানবে না, নিয়মকে মানবে না সেই কুলক্ষণ দেখা যাচ্চে। পাখা নেই তবু উড়তে যাবে এমনি ভাবখানা— সেটা ঘাড় ভাঙবারই উপায়। কি বল হে ৬৯ঙ, তাই নয় কি ? বিশু ভয় নেই, সর্দার। ভদ্ররকমে আত্মহত্যা করে মরবার মত উচুতেও ওরা নেই। যে তলার মাটিতে ওদের চীৎ করিয়ে রেখেচ সেখানে উঠবে কোথায় যে পড়বে ? মাঝে মাঝে পাশ ফিরতে চায় সেটাতে ভূমিকম্পের আশঙ্কা নেই। সর্দার নাত্নী। একটা সুখবর আছে। ওদের ভালো কথা শোনাবার জন্যে নিজের খরচে কেনারাম গোসাইকে আনিয়ে রেখেচি। তার কাছে রোজ সন্ধেবেলায়—