পাতা:রঙ্গলাল-গ্রন্থাবলী.djvu/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঞ্চীকাবেরী তাহা দেখি অনেকের বিরস অস্তর। মনে ভাবে এ শকুন অশুভ-অাকর। রাজা কন, "পুভুর আদেশ মাত্র সার । এ শকুন অশকুন মানি সব ছার।" শ্যামল ধবল অশ্বারোহী দুইজন। দুই ক্রোশ আগে আগে করেন গমন। মাণিক গোপিনী-হস্তে অঙ্গুরী লইয়। চঞ্চল হইয়। পথে আছে দাড়াইয়া । কৃষ্ণ রাজপুতে সারি অস্থির অন্তর। যুগল নয়নে অশ্রু ঝরে নিরস্তর। কহে, "কোথা গেল মোর নবীন কিশোর। আহা মোর সুখনিশি প্রদোম্বেতে ভোর । তার কি পাইব দেখা শ্যামল ত্ৰিভঙ্গে ? এই ছুরি পামরীকে না নিলেন সঙ্গে । অধম গোয়াল-কুলে আমার জনম । ছাঁর বুদ্ধি কি বুঝিব মহৎ-মরম। দধিভাণ্ড বিকাইয়া চাহিলীম দাম । তাই কি করিয়া কোপ গেল গুণধাম ? শ্ৰীহস্ত-অঙ্গুরী খুলি দিয়ে গেল বাধা । আমার যে মন সে চরণে গেছে বাধা ।” এইরূপে মাণিকা করিছে কাল-পাত। অপরূপ ভাব-ভানু প্ৰভাতে প্রভাত। যদবধি হেরিল সে পুরুষ-বতনে । সকলেই তুচছ বোধ হয় তাঁর মনে । ভানুরে খদ্যোত ভাবে সাগরে গোম্পদ । মেরু মৃৎপিণ্ড, তৃণ কুবের-সম্পদ। অমূল্য পদার্থ প্রেম মূল্য কিবা তার ? যে জেনেছে এ সংসার তাঁর কাছে ছাঁর । প্তেম ধৰ্ম্ম, সার ধৰ্ম্ম, প্ৰেম-সুখ সার । পেমময় এ জগৎ সন্দেহ কি আর ? ভাবিনী এ ভাবে আছে এমন সময় । সসৈন্যেতে নরনাথ হইল উদয় । রাউত • মাছত দূত আরো সৈন্যগণ । মাণিকারে নিরখিয়ে বিমোহিত মন : • রাজপুত শব্দের অপভ্রংশ, যদিও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে রাজপুতেরাই এই উপাধি ধারণ করেন, কিন্তু উৎকলে কচুৎপাদক এক জাতি পূদ্র যেমন 8 ֆե{է যে দেখে তাহার অাঁর চরণ না চলে । চিত্র-পুতুলের প্রায় হইল সকলে । ভিড় দেখি জিজ্ঞাসা করেন নরপতি । “স্থগিত হইল কেন কটকের গতি ?” অনুচর কহে, "অবধান মহীপাল । অপূর্ব নারীর রূপে রাজপথ আল। গোয়ালিনী হবে হেন আকার প্রকার। মস্তক-উপরে অাছে গোরস-সন্তরি। রন্তা তিলোত্তম৷ কিবা মেনকা উর্বশী। রাউত রাউত বলি ফুকরে রূপসী ।” শুনিয়া স্থগিত তথা হইলা ভূপতি। “কোথায় কোথায় ?” বলি যান শীঘ্ৰগতি। দেখেন সুন্দরী এক মুনি-মনোলোভা । লাবণ্য-লহরী কিবা অবতীর্ণ শোভা । নরবরে হেরি কহে গোয়ালার মেয়ে । “হেথা আমি আছি শুধু তব পথ চেয়ে।” রাজা কন, “কি বলিবে বল ত অামায়।" মাণিক কহিছে, “তবে শুন মহাকায় । যজ্ঞোপবীত ধারণ করিয়া 'হলিয়া বায়ণ' বলিয়া খ্যাত হইয়াছে, সেইরূপ চাষাখণ্ডাইস্তের ক্ষত্রিয়াভিমান-সুখ বলাৎকার কবিয়া রাউত নামে পরিচয় দেয়, ইহাদিগের মধ্যে কোন কোন শেণী গলদেশে সর ধারণ করে, অনার্য্য দেশে তীর্ঘদিগের সভ্যতা পচারিত হইলে, এইরূপ কত্রিম দ্বিজত্ব ধারণ করা একটি পুরাতন পথ,--ভারতবর্ষে বচ্চতর পদেশে ইহা দ্রষ্টব্য,---উড়িষ্যায় যাহার রাজশদিগের দ্বার। খণ্ডা-বহনে অর্থাৎ যুদ্ধ-বিগহে নিযুক্ত হইত,তাহারাই খণ্ডায়িত ক্ষত্রিয় বলিয়া অভিমান করে.--যাহার। কৃষিকার্ষ্যে নিযুক্ত রহিল, তাতার তদাপি তাপনাদিগকে শূদ্র বলিয়া পরিচয় দেয় । ফলতঃ উভয়েই আদিম শূদ্র অর্থাৎ অনার্য্য জাতির অবশিষ্ট সন্ততি খণ্ডায়িতের ক্ষত্ৰিয়ত্বের অভিমান করুক, কিন্তু চাষা অর্থাৎ শূদ্রদিগের সহিত তাহাদিগের বিবাহাদি অবাধে চলিতেছে -এমন কি উৎকলে করণাভিমানী কোন কোন মাহান্তিকাও তাঁহাদিগের সহিত করণকারণ করে. উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এবং বঙ্গ প্রদেশের কায়স্থদিগের ন্যায় তাহারা গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ নহে ।