পাতা:রজনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

 অমরনাথের কথা।

কি স্ব সে সকল, এক্ষণে লোপ পাইয়াছে, কেবল দুই একজন সন্ন্যাসী উদাসীন প্রভৃতিয় কাছে, সে সকল লুপ্তবিদ্যার কিয়দংশ অতি গুহাভাবে অবস্থিতি করিভেছে । আমাদিগেয় বাড়ীতে ‘ একজন সন্ন্যাসী কখন কথন যাতায়াত কয়িয়া থাকেন, তিনি আমাকে ভালবাসিতেন। তিনি বপন শুনিলেন আমি রজনীকে বিবাহ করিব,তখন যলিলেন, “শুভদৃষ্টি হইবে কিপ্রকারে কন্যা বে অন্ধ। আমি রহস্য করিয়া বলিলাম, • আপনি অন্ধত্বের আরোগ্য করুন।’ তিনি বলিলেন, ‘ করিব—এক भाप्नं ঔবধ দিয়া,তিনি একমাসে রজনীর চক্ষে দৃষ্টির স্বজন করিলেন।” আমি আরও বিস্মিত হইলাম, বলিলাম, " না দেখিলে, আমি ইহা বিশ্বাস করিতাম না । ইউরোপীয় চিকিৎসাশাস্ত্রাতুসারে, ইহা অসাধ্য ।”

এই কথা হইতেছিল, এমত সময়ে একবৎসরের একটি শিশু, টলিতে টলিতে, চলিতে চলিতে, পড়িতে পড়িতে, উঠিন্তে উঠিতে সেইখানে আসিয়া উপস্থিত হইল । শিশু আসিয়া, রজনীর পায়ের কাছে দুই একটা আছাড় খাইর, তাহার বস্ত্রের একাংশ ধৃত করিয়া টানাটানি করিরা উঠিয়, রজনীর আঁটু ধরিয়া তাহার মুখপানে চাহিয়া, উচ্চহাসি হাসিয়া উঠিল। তাহার পরে, ক্ষণেক আমার মুখপানে চাহিয়া, হস্তোত্তোলন করিয়া আমাকে বলিল, “ দ৷ ” (যা ! ) আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, " কে এটি ?” শচীন্দ্র বলিলেন, “ আমার ছেলে।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “ ইহার নাম কি রাখিয়াছেন ?” শচীন্দ্র বলিলেন, “ অমরপ্রসাদ ।” আমি আর সেখানে দাড়াইলাম না । সমাপ্তঃ ।