পাতা:রথযাত্রা ও অন্যান্য গল্প - নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৯৩১).pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রথযাত্রা ও অন্যান্য গল্প

অমৃতা দুধ খাইয়া বেদানা মুখে দিল। অমৃতার সমবয়সী দুটি মেয়ে, মঞ্জুলা ও শেফালিকা দরজার গোড়ায় আসিয়া দাঁড়াইল।

 মা। তোমরা দাঁড়িয়ে রইলে কেন? এস, ঘরের ভিতর এস।

 অমৃতা। মঞ্জুলা আর শেফালি, তোরা যে বড় এমন সময়? স্কুলে যেতে হবে না?

 কন্যা দুইটি তক্তপোষের কাছে আসিয়া দাঁড়াইল।

 মঞ্জুলা। আজ যে রথের ছুটি।

 অমৃতা। তাও ত বটে। আমার এই অসুখ হয়ে সব কথা ভুলে যাই। হাঁ মা, ছোটবেলায় দোরগোড়া থেকে আমি কেমন ভেঁপু কিনে আনতাম!

 মা। এখন বুঝি আর ছোট নেই? মস্ত গিন্নী হয়েছিস, না?

 অমৃতা। তা বলে’ এখন আর ভেঁপু বাজাবার বয়স আমার নেই। (পথে ভেঁপুর শব্দ) ঐ শোন।

 মা। আজ রথের দিন, ছেলেমেয়েরা ত ভেঁপু বাজাবেই।

 অমৃতা। মা, খুড়ীমাকে একটা ভেঁপু কিনে দাও না।

 খুড়ীমা। শুনলে দিদি, মেয়ের কথা? আমার সঙ্গে কেবল তামাসা। এখনি বলছিল, আমি যখন বিয়ের ক’নে এ বাড়ীতে আসি, সে-কথা ওর মনে আছে।

 মা। তোমাকে সমবয়সী মনে করে’ তোমাকে ক্ষেপায়।

 খুড়ীমা। আমি ক্ষেপতে গেলাম কেন? ও যা বলে তাই আমার মিষ্টি লাগে।

 শেফালিকা কোঁচড়ের ভিতর হইতে কতকগুলা কদম ফুল বাহির করিয়া অমৃতার হাতের কাছে রাখিল। দিদিমা ঘরে প্রবেশ করিলেন।