পাতা:রথযাত্রা ও অন্যান্য গল্প - নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৯৩১).pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রথযাত্রা

 অমৃতা। বাঃ, কি সুন্দর কদম ফুল! (একটা হাতে তুলিয়া) কি চমৎকার গন্ধ! ফুলের শুঁয়ো দেখেচ? যেন আহ্লাদে শিউরে রয়েচে! তা, শেফালি, তুই যে বড় কদম ফুল এনেছিস্? তোর ত শিউলি ফুল আনতে হয়!

 সকলের হাস্য।

 দিদিমা। বিছানায় শুয়ে না থাকলে কে বলবে মেয়ের অসুখ করেছে? ওর মতন মজার কথা আমাদেরও মুখে আসে না।

 খুড়ীমা। এইবার ভাল হয়ে উঠ্‌বে।

 মা। বাছা সেরে উঠলে আমি পাঁচ টাকার পূজো দেব। অসুখ হতেই মানত রেখেচি।

 অমৃতা। হাঁ, অসুখের গেরোগুলো খুলে যাচ্ছে। আর আমাকে বেঁধে রাখতে পারবে না। সকলে নীরব। মঞ্জুলা ও শেফালিকা খুড়ীমার মুখের দিকে চাহিতে লাগিল।

 অমৃতা। আচ্ছা দিদিমা, সোজা রথ আর উল্টো রথ কেন বলে?

 দিদিমা। জগন্নাথের চানযাত্রা কি না। যাবার সময় সোজা রথ, ফিরে আসবার সময় উল্টো রথ।

 অমৃতা। রথের ঘোড়া কি হ’ল?

 দিদিমা। সেকালে ঘোড়ায় টানত, এখন মানুষে টানে।

 অমৃতা। সেকালে রথে চেপে যুদ্ধ করতে যেত। মেয়েদের কি রথে উঠতে নেই? তা হ’লে সুভদ্রা দুই ভাইয়ের মাঝখানে রথে ওঠেন কেন?

 দিদিমা। ঠাকুরদের সঙ্গে মানুষের কথা! দেবতার রথে কি মানুষের উঠতে আছে?