ধোঁয়া বাহির করিতে আরম্ভ করিলেন। পথ ধোঁয়ায় অন্ধকার হইয়া গেল, পিছন হইতে আর কিছু দেখা যায় না। সেই অবসরে নসীর খাঁ রাস্তার মোড় ফিরাইয়া মোটর একপাশে দাঁড় করাইলেন। তাঁহার ইঙ্গিত-মত মোটর-চালক পিস্তল হাতে নামিল। সিকন্দর শাহ নসীর শাহের সঙ্গে নামিলেন। তিনজনে একটা বড় বটগাছের আড়ালে দাঁড়াইলেন। তখনও পিছনের মোটর আসিয়া পৌঁছায় নাই, বাতাসে ধোঁয়া অল্পে অল্পে উড়িয়া যাইতেছে।
বড় মোটর মোড় ফিরিতেই আরোহীরা দেখিল, অন্য মোটর পথের পাশে দাঁড়াইয়া রহিয়াছে। তখনি ব্রেক বাঁধিয়া আরোহী দুইজন লাফাইয়া পড়িল, দুইজনেরই হাতে পিস্তল। তাহারা নসীর খাঁর মোটরের দিকে অগ্রসর হইল।
তাহাদের পশ্চাৎ হইতে কে স্পষ্ট, কঠোর স্বরে কহিল,—তোমরা যেমন আছ তেমনি দাঁড়াইয়া থাক। পিছনে মুখ ফিরাইও না। হাতের পিস্তল মাটিতে ফেলিয়া দাও।
সে দুই ব্যক্তির মধ্যে একজন অল্প ঘাড় বাঁকাইয়া পিছনে দেখিবার চেষ্টা করিল। তৎক্ষণাৎ—দুম্! তাহার কানের পাশ দিয়া শোঁ করিয়া গুলি বাহির হইয়া গেল।
নসীর খঁ সেইরূপ কঠিন কণ্ঠে কহিলেন,—এবার মুখ ফিরাইলে গুলি তোমার মাথায় লাগিবে। তোমাদের পিছনে তিনটি পিস্তল। তোমরা পিস্তল ফেলিয়া দাও, নহিলে হাতে গুলি করিব।
পিস্তল দুইটা পথের মাঝখানে সশব্দে পড়িয়া গেল। নসীর খাঁ ও সিকন্দর শাহ সেই দুই ব্যক্তির সম্মুখে আসিয়া দাঁড়াইলেন, তাঁহাদের পিস্তলের লক্ষ্য তাহাদের বক্ষঃস্থল। নসীর খাঁ মোটর-চালককে কহিলেন,—ইহাদের কাছে কি আছে দেখ।