অমৃতা। মা গো, আমাদের সবাইয়ের চোখে যে ঠুলি বাঁধা। তিনি দয়া করে’ যদি খুলে দেন। তাঁর ত ছোট-বড় নেই, বয়সের কোন হিসেব নেই। ধ্রুব-প্রহ্লাদের কত বয়স হয়েছিল? বয়স যে কখন্ ফুরোয়—
দিদিমা আর তাঁর সঙ্গে আর একটি বৃদ্ধা রমণী আসিলেন। অমৃতার কথা বন্ধ হইল। অমৃতার মা ও খুড়ীমা উঠিয়া বৃদ্ধার পায়ে হাত দিয়া নমস্কার করিলেন।
মা। রাঙাদিদি, তুমি কবে এলে? কত তীথ্থি ঘুরে এলে!
রাঙাদিদি। আর মা, কপালে যা ছিল। দ্বারিকায় গিয়েছিলাম। সেখান থেকে পেরভাস। দ্বারিকায় গেলেই পেরভাসে যেতে হয়। পেরভাসে মিলন হয়েছিল কি না। কেষ্টো আর অর্জ্জুন যে নরনারায়ণ ছিলেন।
দিদিমা। (কপালে যুক্তকর স্পর্শ করিয়া) নরনারায়ণকে নমস্কার। তুমি কত দেখে এলে, তোমাকে দেখলেও পুণ্যি হয়।
রাঙাদিদি। ওসব বাড়াবাড়ি কথা। অমীর বড় অসুখ শুনে তাড়াতাড়ি দেখতে এলুম।
মা। বাছা আমার কুড়ি দিন ধরে’ ভুগছে, আজ একুশ দিন। আজ একটু হালুচালু হয়েছে।
রাঙাদিদি। অমীকে আমার মনে আছে ঠিক যেন মোমের পুতুলের মতনটি ছিল। এখন মেয়ে বিছানার সঙ্গে মিশে গিয়েচে, যেন পাতখানি।
অমৃতা। (অস্ফুট স্বরে গুন গুন করিয়া) মাটিকে দেহিয়া মট্টীমে মিল যানা—তাদেলমান! তাদেলমান!
রাঙাদিদি। অমী গুন গুন ক’রে কি গান করচে?