অমৃতা। ও কিছু নয়, ফকীরদের একটা কথা। হাঁ, রাঙাদিদি, দ্বারিকায় কেষ্টোঠাকুর রাজা ছিলেন, সেখানে তাঁর রথ দেখলে?
রাঙাদিদি। রথ?
মা। আজ রথ কি না, তাই কেবল রথের কথা কইচে। মঞ্জুলা আর শেফালি এসেছিল, তারা কতকগুলো কদম ফুল দিয়ে গিয়েচে। কদম ফুল দেখে অমী বৃন্দাবনের কত কথা বল্ছিল।
রাঙাদিদি। বৃন্দাবনে ক’টাই বা কদম গাছ! আমি ত খুঁজে খুঁজে দেখতেই পাইনে।
অমৃতা। নাইক সে বৃন্দাবন, নাইক সে মদনমোহন! রাঙাদিদি, দ্বারিকায় রথ দেখলে, না শুধু কলা বেচাই সার?
রাঙাদিদি। শোন কথার বাঁধুনি! এখন ত মেয়েরাও বক্তিমে করে, কিন্তু অমীর মুখের কাছে কেউ দাঁড়াতে পারবে না। না ভাই, রথ থাকলেও থাকতে পারে কিন্তু আমরা কই ত দেখি নি।
পথে কোলাহল। রথ টানিয়া লইয়া যাইতেছে। রথচক্রের ঘর্ঘর শব্দ। রাঙাদিদি ও দিদি-মা একবার বাহিরে গিয়া রথ দেখিয়া আবার ফিরিয়া আসিলেন। জনতা ও রথের শব্দ দূরে চলিয়া গেল।
অমৃতা। (নিজের মনে মৃদুস্বরে) ঠাকুর যখন বিশ্বম্ভর মূর্ত্তি ধরেন তখন আর রথ নড়ে না, হাজার লোক মিলেও রথ টানতে পারে না। আর জগন্নাথের রথ চাকার তলায় মানুষকে পিষে দিয়ে চলেচে, চাকার সুমুখে যে পড়ে তার আর রক্ষে নেই। সুয্যির রথ চলে আকাশ দিয়ে, রং বেরংগের ঘোড়া, ঘোড়ার পায়ের তলা দিয়ে আলোর ফিন্কি ওঠে, আগুনের ধুলো ওড়ে। আলোতে রথ ঢাকা পড়ে।
রাঙাদিদি। (অমৃতার মার মুখের দিকে চাহিয়া) বিব্ভুল বক্চে?