মা। বালাই, বিব্ভুল কেন বকতে যাবে? ওর কথা শুনলে অবাক্ হ’তে হয়। কত সব জ্ঞানের কথা বলে।
রাঙাদিদি। তাই ত, আমি ভেবেছিলাম শুধু বুঝি তামাসাই করে, তা আমি ত সম্পর্কে ওর ঠানদিদি হই। ঐটুকু মেয়ে, গলা টিপলে এখনো দুধ বেরোয়, এমন সব কথা শিখ্লে কোত্থেকে?
অমৃতা। কলিকাল, কলিকাল! জান না, রাঙাদিদি? কলিকালে সবই অনাছিষ্টি।
রাঙাদিদি। না, না, তা কেন? তোমার ও-সব কথা সত্যি যুগের মতন।
অমৃতা। দিদিমা, শুনলে ত, আমি সত্যিযুগের মেয়ে পথ ভুলে কলিকালে এসে পড়েছি।
দিদিমা। মা, মা, মা! এত কথাও তোর আসে!
অমৃতা। (স্মিতমুখে) ছুটোছুটি করবার এখন ত আর সাধ্যি নেই, মুখখানাই নাড়াচাড়া করি।
রাঙাদিদি। এখন তবে আসি। বউ-মা কাল বাপের বাড়ী গিয়েছে, উল্টো রথের পরে আসবে। সংসারের সব কাজ আমাকেই কর্তে হচ্চে। অমী শীগ্গির শীগ্গির সেরে উঠুক এই আশীর্ব্বাদ করচি।
মা। তোমাদের আশীর্ব্বাদে মেয়ে আমার যেন ভাল হয়ে ওঠে।
রাঙাদিদি। তা হবে বই কি! তুমি ভেব না মা, আজ ত অমীকে ভালই দেখাচ্চে। তাঁকে ডাক, তিনি ভাল করে’ দেবেন।
অমৃতা। তখন রথে উঠব।
রাঙাদিদি চলিয়া গেলেন। তাঁহার সঙ্গে কথা কহিতে কহিতে দিদিমাও ঘরের বাহিরে গেলেন। অমৃতা চক্ষু মুদ্রিত করিয়া চুপ করিয়া রহিল।