মা। দেখতে দেখতে বেলা গেল। একটু পরেই ডাক্তার আসবে। ছুটির দিন বলে’ ছেলেরা কে কোথায় বেরিয়ে গিয়েচে, এখনি এসে খাবারের জন্য পাগল করে তুলবে। যাই, ঝিকে বাজারে পাঠিয়ে দিয়ে আসি।
খুড়ীমা। আমি ত রয়েচি দিদি, তুমি কাজ সেরে এস।
মা উঠিয়া গেলেন।
অমৃতা। খুডীমা, একটু খাবার জল দাও ত।
খুড়ীমা। (তাড়াতাড়ি উঠিয়া) একটা কমলালেবু ছাড়িয়ে দেব?
অমৃতা। এখন নয়, শুধু একটু জল দাও। (জলপান করিয়া) খুড়ীমা, আমার বুকে একবার হাত দাও ত।
খুড়ীমা। (বুকে হাত দিয়া) এ কি, তোমার বুক অমন ধড়াস্ ধড়াস্ করচে কেন? নিঃশ্বাস ফেলতে কি কষ্ট হচ্চে? যাই, দিদিকে ডেকে নিয়ে আসি।
অমৃতা। (খুড়ীমার হাত চাপিয়া ধরিয়া) তোমার কাউকে ডাকতে হবে না। চুপ করে’ বসো আমার কাছে। বনের পাখীকে খাঁচার ভিতর পূরলে কি রকম ছট্ফট্ করে দেখেচ? খাঁচার শিকে পাখা-ঝাপটা মারে, কেবল এদিক-ওদিক ঘোরে। খাঁচা খুলে দিলে উড়ে যায়, আর ধড়ফড় করে না। আমার বুকের পাঁজরাগুলো লোহার গরাদে, তার ভিতর থেকে পাখী বেরুবার জন্য ও-রকম করচে।
খুড়ীমা। ও-সব কি কথা! অমন কথা বলতে নেই।
অমৃতা। শুধু তোমাকে বলচি। রথে উঠলেই আমার সব সেরে যাবে।
(মা ও দিদিমার প্রবেশ।)
খুড়ীমা। অমী অমন করচে কেন? অসুখ বাড়েনি ত?