পাতা:রথযাত্রা ও অন্যান্য গল্প - নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৯৩১).pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
রথযাত্রা ও অন্যান্য গল্প

 অমৃতা। (একবার হাঁপাইয়া, অল্প হাসিয়া ক্ষীণ স্বরে) ডাক্তারবাবু, কেমন দেখচেন? দাদাবাবু, আমার জন্য রথ আসচে, জান?

 বৃদ্ধ। ও কি বলচে?

 দিদিমা। আজ রথ কি না, সারাদিন বলচে রথে উঠবে।

 ডাক্তার ও বৃদ্ধ ঘরের বাহিরে আসিলেন। অমৃতার পিতা বজ্রাহতের ন্যায় স্তব্ধ হইয়া অমৃতার পাশে দাঁড়াইলেন। মাতা অশ্রুসিক্তনয়নে অমৃতার হাত নিজের হাতে তুলিয়া লইলেন। খুড়ীমা মাথায় ঘোমটা দিতে ভুলিয়া গিয়া অন্য পাশে দাঁড়াইলেন। দিদিমা কাছে দাঁড়াইয়া। মঞ্জুলা ও শেফালিকা অমৃতার পায়ের কাছে দাঁড়াইয়া তাহার মুখ দেখিতেছে।

 ঘরের বাহিরে ডাক্তার ও বৃদ্ধ দাঁড়াইয়া মৃদুস্বরে কথা কহিতেছেন।

 ডাক্তার। নাড়ী নেই!

 বৃদ্ধ। তেমন বিশেষ শ্বাসেরও লক্ষণ নেই। খুব অল্পক্ষণ মেয়াদ। মকরধ্বজ আর মৃগনাভি দিয়ে দেখা যাক্‌।

 ডাক্তার। তাই দেখুন।

 দু’জনে আবার ঘরে আসিলেন। বৃদ্ধ খলে মকরধ্বজ ও মৃগনাভি মাড়িয়া অমৃতাকে সেবন করাইতে গেলেন। অমৃতা মাথা নাড়িয়া নিষেধ করিল।

 অমৃতা। ও-সব আর কিছু না। দেখচ না সব বাঁধন খুলে গিয়েচে? শুধু রথ আসতে বাকি। দেখ—বাবা, এঁদের বেশী কাঁদতে দিও না, কান্নার সুর আমার সঙ্গে সঙ্গে যাবে।

 মা। ও মা, আমায় কিছু বলবি নে?

 অমৃতা। মা আসি। এর পর আবার সব—কথা হবে। খুড়ীমা, দিদিমা, দাদাবাবু, সরাই পায়ের ধূলো দাও। হাঁ মা, এত অন্ধকার