কাছে কোথায় না—কি দেবীর মূর্ত্তি পাওয়া গিয়েছে। বড় জাগ্রত দেবতা। সত্যি কি?
—সত্যি বই কি! সব কথা বুঝি তোমরা শোন নি? গ্রামে একঘর বামুন আছে, তার স্বপন হ’ল যে, দেবী তার ঘরে আসবেন। স্বপনে দেখে অন্নপূর্ণার রূপ, রূপে ঘর আলো ক’রে মা তার শিয়রে দাঁড়িয়া বলছেন, দেখ্ তুই বড় দুঃখী, আমি এলে তোর দুঃখ ঘুচে যাবে। পঞ্চাননতলা দিয়ে যে পথ গাঁয়ের বাইরে গিয়েছে, সেই পথে অশ্বত্থ গাছের উত্তর ধারে আমি আছি। আমাকে তুলে নিয়ে এসে ঘরে রাখ্, তার পর আলাদা মন্দিরে রাখ্বি। স্বপন পেয়ে বামুন সেই গাছতলায় খুঁড়ে দেখে, সত্যি সত্যিই ঠাকুর রয়েচেন! তুলে নিয়ে এসে ঘরে রাখ্লে, আর দেখতে দেখতে চারিদিকে কথা রাষ্ট্র হয়ে গেল। আশপাশের গ্রাম থেকে, দূরের গ্রাম থেকে কত লোক মানত্ ক’রে আস্তে লাগ্ল, কত লোক হত্যা দিতে আসতে আরম্ভ করলে। ভারি জাগ্রত দেবতা। কত লোকের রোগ-বালাই সেরে গিয়েছে, কত লোক ঠাকুরকে সোনার গহনা গড়িয়ে দিয়েছে। বামুনের বড় কষ্ট ছিল, এখন বেশ সচ্ছল সংসার। ঠাকুরের মন্দির হয়েছে, বামুন প্রায় মন্দিরেই থাকে, মা’র আরতি করে, ভোগ দেয়, এমন ভক্তি দেখি নি। সাধে কি মানুষে ঠাকুর-দেবতায় বিশ্বাস করে?
কুমুদিনী আর হেমলতা ব’লে উঠলেন,— পিসীমা, এক দিন আমরা দর্শন কর্তে যাব।
—যাবে বই কি। এত লোক যাচ্ছে, তোমরা যাবে না কেন? আমি সঙ্গে ক’রে নিয়ে যাব।
—তা ত যাবেই, তোমাকে কি আমরা ছেড়ে যাব?