পাতা:রথযাত্রা ও অন্যান্য গল্প - নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৯৩১).pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
রথযাত্রা ও অন্যান্য গল্প

 অন্য কথাবার্ত্তা হ’তে লাগল। পিসীমা বললেন,—আগে আগে সহরে আর পাড়াগাঁয়ের লোক একটু আলাদা আলাদা রকম হ’ত। সহরে খরচপত্র বেশী, সকলে নিজের নিজের ধন্ধা নিয়ে থাকে, কেউ কারুর খোঁজ রাখে না। পাশের বাড়ীতে কে থাকে, হয়ত তার নামই জানে না। পাড়াগাঁয়ে তবু ঢের ভাল, পাড়াপড়শীর খোঁজখবর রাখে, বিপদ-আপদে বুক দিয়ে পড়ে। কিন্তু সেটাও ক’মে যাচ্ছে। এখন দেশে ব’সেও কেবল সহরের কথা। পাড়াগাঁয়ের ছেলেরা সহরে পড়তে আসে, বাবুরা চাকরী কর্‌তে আসে। মনে করলেই এখানে আসা যায়, রেলের পথ, নৌকাতে আর ক’জন যাওয়াআসা করে? যা এখানে হবে, পাড়াগাঁয়েও তাই, সব যেন এক হয়ে গিয়েছে।

 হেমলতা বল্‌লেন,—তুমি ত পিসীমা অনেক দেখেছ শুনেছ, আমরা ত কিছুই দেখি নি, তবু মনে হয়, সব যেন কি রকম হয়ে যাচ্ছে।

 কথার মাঝখানে চাঁপা ঝি এসে খবর দিলে, পিসীমা, তালতলার দাদাবাবু এসেছে।

 দাদাবাবু পিসীমার ভাসুরপো বিপিন, বছর কুড়ি বয়স, বি-এ পাশ করেছে। পিসীমা বল্‌লেন,—ডেকে নিয়ে আয় না!

 হেমলতা বল্‌লেন,—আমি উঠে ঘরের ভিতর যাই। আমি ত কখনো ওঁর সুমুখে বেরুই নি।

 পিসীমা বল্‌লেন,—তার আর কি হয়েছে? তোমার ছেলের বয়সী, ওর কাছে আবার লজ্জা কি?

 হেমলতা ব’সে রইলেন। বিপিন এসে আগে পিসীমাকে প্রণাম কর্‌লে, তার পর কুমুদিনী আর হেমলতাকে। বাড়ীর কে কেমন