পিসীমা বললেন,—এ যে পথ-ঘাট অনেক বদলে গিয়েছে! মন্দিরের আশে-পাশে ভেঙ্গে চুরে বড় রাস্তা হয়েছে।
কুমুদিনী বললেন,—মিউনিসিপালিটি থেকে সব পরিষ্কার ক’রে দিয়েছে, চারদিকে তেমন আর ঘিঞ্জি নেই।
পিসীমা মন্দিরের দিকে চেয়ে চেয়ে দেখ্ছিলেন। মন্দিরের দেয়ালে বড় বড় অক্ষরে নানা রকম বিজ্ঞাপন লেখা। পিসীমা বললেন,—এ আবার কি? কালীর মন্দির কি বড় রাস্তা, না কারুর কেনা বাড়ী? মন্দিরের চারিদিকের দেয়ালে সব দোকানওয়ালাদের বিজ্ঞাপন! এর নাম কি ঠাকুর-দেবতাকে ভক্তি? মন্দিরের ভিতর এত টাকা পড়ছে, হালদাররা বড়মানুষ হয়ে গেল, চারদিকে বড় বড় ইমারত, এতে কি হয় না? আবার ঠাকুরের মন্দিরের দেয়াল-ভাড়া টাকা তুলছে! আমরা হিঁদু, হিঁদুয়ানীর এত ডব্ডবা দেখাই, আর এমনতর দেখে কারুর মুখে একটি কথা নেই? মুসলমানদের মসজীদে কি খৃষ্টানদের গির্জের দেওয়ালে কেউ এমন ক’রে লিখুক্ দেখি, কেমন তার মাথা থাকে! ওরা আমাদের চেয়ে ঢের ভাল!
কুমুদিনী ত অবাক্। বললেন,—সত্যিই ত পিসীমা, এত লোকের কারুর নজরে ঠেকে না! তুমি ত ঠিক কথাই বলেছ! চারদিকে ত এত হই-চই, এটা কারুর চোখে পড়ল না!
চাঁপা পিছন থেকে বললে,—বলবে নি, পিসীমা বল্বে নি ত কে বলবে? সউরে লোক ত চোখ থাকতে কাণা, পিসীমা এসেই দেখেছে! ও মা, কোথা যাব! কালীঠাকরুণের মন্দিরের দেওয়াল কি ভাড়া দিতে আছে?
কালীঘাট থেকে ফির্তে বেলা প্রায় তিনটে হ’ল। চৌরঙ্গীতে এসে এক যায়গায় খানিকক্ষণ গাড়ী দাঁড় করাতে হ’ল, সামনে পাশে