হাতের ছাতা ঘোরাচ্ছেন, আর মুখ তুলে দেখ্ছেন, কতক্ষণে পাহারাওয়ালা আর সার্জ্জন হাত নামায়। এমন সময় তাঁকে সম্ভাষণ না করাই ভাল। আর চুলের কথা? সেটা পিসীমাকে বুঝিয়ে দেওয়া উচিত।
তাই কুমুদিনী আবার বল্লেন,—পিসীমা, মিসেস মজুমদারের কোন অসুখ করেনি। চুল আপনি কেটেছে।
—বলিস্ কি রে! সধবা মেয়েমানুষ, অমন সুন্দর চুল, পাগল ত আর হয় নি যে, সাধ ক’রে চুল কেটে ফেল্বে!
—হ্যাঁ পিসীমা, মেমেরা এখন ঐ রকম চুল রাখে, তাই দেখাদেখি আমাদেরও কেউ কেউ—
—এইবারে বুঝেছি। ফ্যাসান, হাল ফ্যাসান! একখানা ছবিতে দেখেছিলুম বটে, তা আমার মনে হ’ল, মেমসাহেবের একজ্বরী হয়ে থাক্বে, তাই চুল কেটে দিয়েছে। আমরা হলাম পাড়াগেঁয়ে মুখ্খু মানুষ, আমরা অতশত কি জানি! আর দ্যাখ্; ছবিতে দেখলুম, মেমের ঘাগরার নীচেও খানিকটা কাটা, আধখানা পা বেরিয়ে আছে। সেটাও কি ফ্যাসান?
—হ্যাঁ পিসীমা।
—তা হ’লে আমাদের মেয়েদের মেম সাজতে হ’লে ত ঠ্যাঙে ওঠা কাপড় পরতে হবে! উপরেও ফ্যাসান, নীচেও ফ্যাসান!
সার্জ্জনের হাত নেমেছে, মিসেস্ মজুমদারের মোটর বেরিয়ে গিয়েছে, কুমুদিনীদের গাড়ী আবার চলেছে। কুমুদিনী ত হেসে অস্থির, বল্লেন,—ও পিসীমা, তোমার সঙ্গে কেউ কখনো পারবে না। কালীঘাটের পাণ্ডা, সাহেব, মেম, উকীল, জজ সব হেরে যাবে।
পিসীমা অন্য কথা পাড়লেন।