পাতা:রথযাত্রা ও অন্যান্য গল্প - নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৯৩১).pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
রথযাত্রা ও অন্যান্য গল্প

—8—

সন্ধ্যার সময় পিসীমার দরবার বস্‌ল। ছেলে বড় সকলেই হাজির, সকলের ডাক পড়েছে। বিশ্বনাথ এসে এক পাশে বস্‌লেন। পিসীমা বল্‌লেন,—দেখ বাবা, আমরা পাড়াগাঁয়ে থাকি, একে মুখ্‌খু-সুখ্‌খু মানুষ, তার পর সহরের কিছু জানিনে, চোখে কিছু নতুন ঠেক্‌লে জিজ্ঞাসা করতে হয়। তোমরা লেখাপড়া শিখেছ, কত দেখেছ শুনেছ, আমরা যেটা বুঝতে পারি নে, সেটা বুঝিয়ে দিতে পার্‌বে। আজ এই কালীঘাটে গিয়ে একটা দেখলুম, কুমুদিনীকে বলেছি।

 বিশ্বনাথ বল্‌লেন,—কি দেখলেন, পিসীমা?

 মন্দিরের বাইরে দেয়ালে দেয়ালে কি সব বিজ্ঞাপন লেখা রয়েছে, দোকানদারদের জিনিষ-পত্তরের। আচ্ছা, একটা কথা আমি জিজ্ঞাসা করি, এই কলকেতা সহরে মোছোলমানদের কত মসজীদ আছে, সাহেবদের গির্জ্জে আছে, ইহুদীদের গির্জ্জে আছে, জৈনদের মন্দির আছে, ব্রাহ্মসমাজের মন্দির আছে, আর্য্য-সমাজের মন্দির আছে, শীখদের গুরুদোয়ারা আছে। কোনও জাতের দেবতার মন্দিরে এ-রকম দোকানীপসারীর বিজ্ঞাপন লিখতে দেয়? কালীঘাট পীঠস্থান, দেশদেশান্তর থেকে কত লক্ষ লক্ষ যাত্রী আসে, মায়ের মন্দিরে কি এ-রকম বিজ্ঞাপন লিখতে আছে? একবার আমি কাশীতে ছিলাম, দেখি, রেলে করে অনেক খোট্টা, কলকেতায় আস্‌ছে। তারা সব যাত্রী, গাড়ীতে ওঠবার সময় সব চেঁচিয়ে উঠল, কালী কলকত্তেওয়ালী! কালী মাঈকি জয়! সেতুবন্ধ রামেশ্বর থেকে আর সেই পঞ্জাব পর্য্যন্ত, কোথা