পাতা:রথযাত্রা ও অন্যান্য গল্প - নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৯৩১).pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পদ্ম পিসীমা
৩১

থেকে লোক কালী দর্শন কর্‌তে না আসে! তা মন্দিরে এ-রকম করা কি ভাল?

 —না, পিসীমা, ভাল আর কিসে?

 —আর কোন জাত তাদের দেবতার জায়গায় এরকম কর্‌তে দেয়?

 — কার সাধ্য এ-রকম করে।

 —তবেই হ’ল যে আমরা আমাদের দেবতার সম্মান কর্‌তে জানি নে। তাই তোমায় জিজ্ঞাসা করছি।

 —আমি আর কি বল্‌ব, পিসীমা, বলবার ত কিছু নেই! আপনার চোখে পড়েছে, এত লোক দেখেও দেখে না।

 আর একটা দেখলাম। আমরা সেকেলে মানুষ, ঠাকুর-দেবতা দর্শন কর্‌তে যাই, আর আজকালের মেয়েরা কেউ কেউ রেস খেল্‌তে যায়। তা যাক্, বার যেমন অভিরুচি। চিরকাল ত আর এক রকম যায় না। কিন্তু এই যে সব নতুন হচ্ছে, এ ত আর আপনা-আপনি হচ্ছে না, পরের দেখে। সাহেবরা হ’ল রাজার জাত, ওরা যা কর্‌বে, তাই আমাদেরও কর্‌তে হবে! ওরা অখাদ্য খায়, আমাদেরও তাই খেতে হবে। ওরা কাটা পোষাক পরে, আমাদের পুরুষদেরও তাই পর্‌তে হবে! ওরা ধুচুনী মাথায় দেয়, আমাদেরও তা না হ’লে চল্‌বে না। মেমেরা চুল কেটে যাত্রাওয়ালা ছোকরাদের মত বেড়ায়, আমাদের মেয়েরাও চুল কেটে ফেলবে, যেন কতকেলে রোগী। আগে পৈরাগে গিয়ে মাথার চুল দিত, এখন ফ্যাসানের পায়ের তলায় চুল দেয়। সব দেখাদেখি ত?

 —তা নয় ত আর কি?

 —আর ওদিকে দেখ, সাহেব মেমেরা এ-দেশে এসে ত্রিশ চল্লিশ বছর ক’রে বাস ক’রে মাছের ঝোল ভাত খেতে শেখে না, কোঁচা