রাজ্য রাগিয়া কহিলেন,—‘পরামর্শের কি প্রয়োজন? আমার আজ্ঞা যথেষ্ট। কোন প্রজা আপত্তি করিলে তাহাকেও চণ্ডালের হস্তে সমর্পণ করিব।’
এমন সময় প্রতিহারী আসিয়া অভিবাদন করিল, ‘জয় মহারাজ!’
রাজা ভ্রূভঙ্গে জিজ্ঞাসা করিলেন,—‘কি?’
—‘মহারাজ, রাজমাতা মহারাণী আপনাকে স্মরণ করিয়াছেন।’
—‘এমন সময়? এখন আমি যাইতে পারিব না।’
—‘মহারাজ, বিশেষ কোন প্রয়োজন হইবে। পুরোহিত অপেক্ষা করিতেছেন।’
—‘পুরোহিত? আর কোন লোক ছিল না? উত্তম, ডাক তাহাকে।’
পুরোহিত আসিলেন, উন্নত, শীর্ণ দেহ, উজ্জ্বল আয়ত চক্ষু, বার্দ্ধক্যের স্থবিরতা এখনও দেখা দেয় নাই। রাজা ও তাঁহার সঙ্গিগণ উঠিয়া দাঁড়াইলেন। রাজা প্রণাম করিলেন।
পুরোহিত আশীর্ব্বাদ করিলেন, বসিলেন না। কহিলেন,—‘মগধরাজের প্রধান দূত সশস্ত্র অনুচর-বর্গ লইয়া রাজপ্রাসাদে উপনীত হইয়াছেন। অবিলম্বে মহারাজের দর্শন কামনা করেন।’
আকাশে বাজপক্ষীর কণ্ঠ শুনিলে ও তাহার প্রসারিত পক্ষ দেখিলে পারাবতকুল যেমন চঞ্চল, ত্রস্ত্র ও শঙ্কিত হয়, রাজা ও তাঁহার সখাগণ সেইরূপ বিচলিত হইলেন। মহা প্রতাপান্বিত মগধরাজের এখানে কি প্রয়োজন?
শুষ্ক মুখে বিরূপাক্ষ কহিলেন,—‘মগধরাজ কেন দূত পাঠাইয়াছেন?’
—‘যাইলেই জানিতে পারিবেন। কোন অমঙ্গলের আশঙ্কা নাই,