তবে কালবিলম্ব করিবেন না। রাজবাটীতে আপনাকে দেখিতে না পাইয়া দূত কিছু বিস্মিত হইয়াছেন।’
রাজা বিলম্ব করিলেন না, বেশ পরিবর্ত্তন করিয়া তখনই পুরোহিতের সঙ্গে গমন করিলেন।
তাঁহার বয়স্যগণ কোন কথা না কহিয়া আপন আপন গৃহে গমন করিলেন।
রাজবাটীতে সুসজ্জিত প্রকোষ্ঠে বসিয়া মগধ-রাজদূত রাজা বিরূপাক্ষের অপেক্ষা করিতেছিলেন। রাজাকে দেখিয়া দাঁড়াইয়া উঠিয়া তাঁহাকে অভিবাদন করিলেন। পুরোহিত এক পার্শ্বে দাঁড়াইয়া রহিলেন। সম্ভাষণাদির পর রাজা বিরূপাক্ষ কহিলেন,—‘আমার পরম সৌভাগ্য যে, মগধরাজ আমাকে স্মরণ করিয়াছেন। তাঁহার আদেশ শুনিতে পাই?’
দূত মধ্যবয়স্ক, তীক্ষ্ণদৃষ্টি পুরুষ। কহিলেন,—‘রাজাধিরাজ আপনার সহিত পারিবারিক সম্বন্ধ কামনা করেন। তাঁহার কন্যা নাই, কিন্তু তাঁহার ভ্রাতুষ্পুত্রী পরমা সুন্দরী। মহারাজের ইচ্ছা, আপনি সেই কন্যার পাণিগ্রহণ করেন।’
বিরূপাক্ষ পুরোহিতের দিকে চাহিয়া দেখিলেন, তিনি চক্ষু নত করিয়া দণ্ডায়মান রহিয়াছেন, মুখ তুলিলেন না। চিন্তা করিয়া বিরূপাক্ষ কহিলেন,—‘মাতা-ঠাকুরাণী রহিয়াছেন, এ প্রস্তাব তাঁহাকে জানাইব। তাঁহাকে লঙ্ঘন করিয়া আমি কিরূপে উত্তর দিব?’
দূত কহিলেন,—‘সাধু, আপনি মাতৃবৎসল পুত্ত্রের উপযুক্ত উত্তর দিয়াছেন। রাজমাতার আপত্তির কোন কারণ দেখি না। পুরোহিত মহাশয় কি বলেন?’
রাজা এবং দূত উভয়ে পুরোহিতের অভিমুখে দৃষ্টিপাত