সুজাতা সভয়ে কহিলেন,—‘রাজার প্রকৃতি ত জান? তিনি ত কখন ক্ষমা করিবেন না। তাঁহার অসাধ্য কোন কর্ম্ম নাই। তোমাকে কিরূপ লাঞ্ছনা করিবেন, কে বলিতে পারে?’
‘তাই ত ভাবিতেছি। এখন উপায়?’
—‘কিছু দিন আর কোথাও গিয়া বাস করিলে হয় না? রাজার বিবাহের কথা হইতেছে, বিবাহ হইলে শান্তপ্রকৃতি হইতে পারেন।’
—‘কোথায় বিবাহের কথা হইতেছে?’
—‘সন্ধ্যা হইবার পূর্ব্বে মগধরাজের দূত রাজপথ দিয়া রাজবাটীতে গিয়াছেন। মাসী বলিতেছিলেন, মগধরাজ তাঁহার ভ্রাতুষ্পুত্ত্রীর সহিত রাজার বিবাহের প্রস্তাব করিয়াছেন।’
—‘রাজমাতার মুখে শুনিয়া থাকিবেন?’
—‘সেইরূপ অনুমান হয়।’
—‘তুমি যে স্থানান্তরে যাইতে বলিতেছ, কোথায় যাইব? যে-কর্ম্ম শিখিয়াছি দুই চারি দিনে আরম্ভ করিবার কথা। এখন যদি কোথাও চলিয়া যাই, যাঁহার সহিত কর্ম্ম করা স্থির হইয়াছে তিনি কি বলিবেন?’
—‘রাজা এখন ক্রুদ্ধ হইয়াছেন, কখন কি করিয়া বসেন, তাহার ত স্থিরতা নাই! তুমি কর্ম্ম আরম্ভ করিলে, এমন সময় সহসা যদি তোমায় কারাবন্দী করেন কিংবা আর কোন শাস্তি দেন তাহা হইলে তুমি কি করিবে? তখন ত কর্ম্ম বন্ধ হইয়াই যাইবে, তুমিও বিপদে পড়িবে।’
—‘তুমি যেমন বলিতেছ সেইরূপ করিব। আমার বন্ধুকে বলিয়া কাল বারাণসী চলিয়া যাইব।’
—‘আজ রাত্রে কোন আশঙ্কা নাই ত?’
—‘রাত্রে গৃহে থাকিব না, আর কোথাও গিয়া শয়ন করিব।’
—‘সেই কথা ভাল।’