কিছুক্ষণ কথা স্থগিত হইল। আবার উদয়ন কহিলেন,—‘সুজাতা!’
—‘উদয়ন!’
—‘আমাদের নিজের একটা কথা আছে।’
সুজাতা নখে নখ খুঁটিতে লাগিলেন, কোন কথা কহিলেন না।
—‘তুমি ত আমার মনের কথা জান।’
সুজাতা পূর্ব্বরূপ। উদয়ন তাঁহার হস্ত ধারণ করিলেন, কহিলেন,—‘আমাদের বিবাহে ত কোন বাধা নাই। তুমি স্বীকৃত হইলেই হয়।’
মুষ্টিমধ্যে ধৃত ক্ষুদ্র পক্ষিণীর ন্যায় উদয়নের হস্তের মধ্যে সুজাতার হস্ত কম্পিত হইতেছিল। মৃদুস্বরে কহিলেন,—‘এ-কথা আমাকে কেন বলিতেছ? এখন ত স্বয়ম্বরের প্রথা নাই যে, প্রকাশ্য সভায় তোমার গলায় আমি বরমাল্য পরাইয়া দিব।’
উদয়ন সুজাতার হস্ত মুক্ত করিলেন। মহাশ্বেতা ফিরিয়া আসিলেন। উদয়ন তাঁহাকে কহিলেন,—‘বৈকালে বাহির হইয়াছি, এখনও গৃহে ফিরি নাই। অনুমতি হয় ত এখন গৃহে যাই।’
মহাশ্বেতা সম্মিত মুখে কহিলেন,—‘এ কি তোমার গৃহ নয়?’
—‘আপনাদের স্নেহেই ত আমি প্রতিপালিত।’
উদয়ন বিদায় গ্রহণ করিলেন।
—৪—
পর দিবস প্রাতে দূত মগধে ফিরিয়া যাইবেন সংবাদ পাইয়া রাজা বিরূপাক্ষ রাজপ্রাসাদে আসিলেন। তাঁহাকে দেখিয়া দূত কহিলেন,—‘বিবাহে আপনার সম্মতি জানিয়া মগধরাজ আনন্দিত হইবেন। শুভ দিন স্থির হইলে যথোচিত সমাদরের সহিত আপনাকে রাজধানীতে লইয়া যাইবেন।’