—‘সৈনিকদিগকে লইয়া রাজা মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশ করিয়া থাকিবেন।’
—‘এখানে রাজরাজেশ্বরীর রাজ্য, এখানে রাজা-প্রজা সকলেই সমান।’ পুরোহিতের চক্ষু জ্বলিয়া উঠিল। 'মন্দির-প্রাঙ্গণে সৈনিক! রাজদ্রোহী? রাজা স্বয়ং যখন নিজের শত্রু, অপর শত্রু হইতে কতক্ষণ?’ অপর পুরোহিতকে কহিলেন,—‘আমি বাহিরে যাইতেছি, দ্বার রুদ্ধ কর। আমি না আসিলে দেবীর দর্শন হইবে না।’
পুরোহিত বাহিরে আসিলেন। ভিতর হইতে দ্বার রুদ্ধ হইয়া গেল। রুদ্ধ দ্বারের সম্মুখে দাড়াইয়া পুরোহিত দেখিলেন, প্রাঙ্গণে লোক ঠেলিয়া প্রবেশ করিতেছে, সর্ব্বাগ্রে রাজা, হস্তে মুক্ত অসি, তাঁহার পশ্চাতে সৈনিক, সঙ্গে সঙ্গে জনতা-স্রোত। মন্দিরের দ্বার রুদ্ধ দেখিয়া সকলে থম্কিয়া দাড়াইল, কেবল রাজা দ্রুতপদে মন্দিরের অভিমুখে অগ্রসর হইলেন। সৈনিকেরাও অগত্যা তাঁহার অনুগমন করিল। রাজা কিছু বলিবার পূর্ব্বেই পুরোহিত মুক্ত কণ্ঠে সকলকে শুনাইয়া কহিলেন,—‘মহারাজ, অসি হস্তে সশস্ত্র সৈনিক সঙ্গে আপনি এখানে প্রবেশ করিয়াছেন, ইহা কি দেবীর স্থান, না শত্রুর রণস্থল?’
বিরূপাক্ষ উন্মত্ত বলিলেই হয়। অসংযত যৌবন, সকল প্রকার অত্যাচার, তাহার উপর মগধরাজের দূতের ভয়ে সমস্ত রাত্রি আত্মনির্য্যাতন। রুদ্ধচিত্ত মুক্ত হইয়া রাজা ক্ষিপ্তের ন্যায় হইয়া উঠিলেন, কর্ত্তব্যাকর্ত্তব্য জ্ঞান তিরোহিত হইল। কহিলেন,—‘আমি দেবীর মন্দিরে আসি নাই, পলাতক অপরাধীকে বন্দী করিতে আসিয়াছি।’
পুরোহিত পূর্ব্বের ন্যায় উচ্চ কণ্ঠে কহিলেন,—‘এখানে কেহ