পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলাকা 為> আমরা বলাকার মধ্যে পাই । বলাক রচিত হইবার প্রায় বিশ পচিশ বৎসর পূর্ব হইতেই যে এই ভাবধারাটি তাহার চিত্তের মধ্যে গড়িয়া উঠিতেছিল, তাহা ও এই প্রবন্ধে দেখাইয়াছি। যখন এ কথা বলা যায় যে, শ্রেয়োবোধের পরম সত্য ও পরম বাণীটি রবীন্দ্রনাথের কাব্যবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে উজ্জলতর হইয়া উঠে নাই, তখন আমরা ইহাই বুঝি যে, যে জাগরণের মধ্যে, যে চলৎস্বরূপের মধ্যে, যে অজানার সন্ধানের মধ্যে রবীন্দ্রনাথের কাব্য একটি অদ্ভুত বিশ্বজাগরণের মহিমায় জাগ্রত হইয়া উঠিয়াছে, তাহারি সহিত তুল্য সামঞ্জস্তে সেই শ্রেয়োবোধের বাণীটি ফুট হইয়া উঠে নাই, সে অজানার স্বরূপকে আমাদের নিকট পূর্ণতর ভাবে পরিচিত করিয়া দেয় নাই। তবে এই সঙ্গে এ কথাও বলা আবখ্যক যে, রবীন্দ্রনাথের কবিতায় যে বিশ্বজাগবণের কথা এই প্রবন্ধে বিবৃত হইয়াছে, সেটি যে কেবল তত্ত্বান্বেষণ বা জীবনস্বরূপের এ মটী চলন্ত ছবি তাহা নহে, তাহার অজানা যে কেবল ধ্যানগম্য বা জ্ঞানগম্য তাহা নহে তাহা প্রেমগম্যও বটে। এই অজানাকেই তিনি অন্তৰ্য্যামীরূপে সাক্ষাৎ করিয়াছেন ও পরম প্রভু বলিয়া বারম্বার ইহার চরণে আত্মনিবেদন করিয়াছেন। ইহার সহিত বিরহে ও মিলনে তাহার সমস্ত কাব্য-শরীব রোমাঞ্চিত হইয়াছে । শ্রেয়োবোধেব যে আকর্ষণ মানুষের নিম্পন্দ জীবনকে সৰ্ব্বদা উত্তেজিত কবিতে থাকে— প্রেমের আলিঙ্গনের নিবিড় বন্ধনে শ্রদ্ধাঞ্জলির পুষ্পসম্ভারের মধ্যে তাহাও যেন তন্দ্রালীন হইয়া পড়ে। সেই জন্য যেখানে প্রেমের আতিশয্য সেখানে শ্রেয়োবোধের আত্মমহিমাপ্রকাশের আবশ্বকতা নূ্যন হইয় আসে। রবীন্দ্রনাথ তাহার জ্ঞান-জাগরণের মধ্যে সৰ্ব্বদাই একটি প্রেমের জাগরণ অনুভব করেন । সেইজন্যই অনেক সময়ে শ্রেয়োবোধের উন্মেষ তাহার কাব্যের মধ্যে যথেষ্ট ফুট হইয়া উঠে নাই । দ্বৈতবোধ যেখানে প্রবল শ্রেয়োবোধের উন্মেষ সেইখানেই তাহার আপন শক্তিকে প্রকাশ করে । প্রেমের আলিঙ্গনে যেখানে দ্বৈতবোধ থামিয়া আলিতে থাকে, সেখানে শ্রেয় ও প্রেমের বিরোধ স্পষ্ট হইয়া উঠিতে চাহে না । সেখানে মাতুব বলে,—