পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৬ রবি-দীপিত পরম্পরের মধ্যে আত্মহারাহইয়া আপন নরনারী-ভাব বিস্তৃত হইয়া একটি প্রেমরসের মধ্যে আত্মসাক্ষাৎকার লাভ করে । সহজিয়া কবি তরুণীরমণের একটি অপ্রকাশিত গ্রন্থে লিখিত আছে— শৃঙ্গারসাক্ষাৎ রসরাজ রাধাকৃষ্ণ । , বৰ্ত্তমান সতত থাকিবে হয়ে তুষ্ট । মধুর মাধুর্য্য রাধা হৃদয় বাহিরে। মহা অপ্রাকৃত রস বরিষণ করে ॥ 米 崇 亲 না এক স্বভাবভাব যাবত থাকয় । মধুর মাধব প্রেম তাবত না হয় । অপ্রাকৃত প্রকৃতস্বভাবসিদ্ধ হইলে । কৃষ্ণরস হয় সদা শোনহ সকলে ॥ জীবরতি দূর হইলে তবেই আত্মরতির উদ্ভব হয় এবং এই আত্মরতির মধ্যেই মানুষের চরম সার্থকুতা। পরবর্তীকালের উজ্জলনীলমণি প্রভৃতি বৈষ্ণব-গ্রন্থে দেখা যায় যে নরনারীর প্রেমের নানাবিধ অবস্থাদ্বারা কৃষ্ণ-প্রেম ব্যাখ্যাত হইয়াছে ভারতীয় সাধনার প্রধান দৃষ্টিই এইখানে যে, একত্ব বুদ্ধিদ্বার। মানুষের অন্তরাত্মাকে পরিপুত করিয়া তোলা। জ্ঞানের পথে দার্শনিকের এই তত্ত্ব প্রচার করিতে চেষ্টা করিয়াছেন । বৈরাগ্য ও একাগ্র সাধনার পথে ইচ্ছাশক্তিকে নিয়মনের দ্বারা যোগীরা এই পথ অনুসন্ধান করিয়াছেন ও প্রেমের পথে ভাগবতেরা এই তত্ত্বই বিভিন্ন উপায়ে লাভ করিতে চেষ্টা করিয়াছেন। নরনারীর বিশুদ্ধ প্রেমের মধ্যে আত্মরূপী ভগবান অবতীর্ণ হইয়া আমাদের আত্ম-প্রকাশের চরম সার্থকতা সম্পন্ন করেন এবং ভগবৎ-প্রেমের মধ্যেও নরনারী-সুলভ প্রেম মধুরোজ্জল মূৰ্ত্তিতে পরম পদবীতে নীত হয়। ইহাই ভারতীয় প্রেমসাধনার শেষ কথা ।