পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্রসাহিত্যে কান্ত প্রেম *२S হইয়া স্থানলাভ করিয়াছে। তাহার প্রেমাম্পদ শুধু তাঙ্গর অস্তরের মধ্যে নহে— অন্তর-বাহির ব্যাপ্ত করিয়া ভিতর হইতে বাহিরে এবং বাহির হইতে ভিতরে, মনের সমস্ত গানে, কল্পনায়, অনুভবে, ধ্যানে ও বাহিরের জগতের আকাশে, বাতাসে, আলোতে সৰ্ব্বত্র যেন ব্যাপ্ত হইয়া রহিয়াছে। বিশ্বভুবন আসিয়া তাহার অন্তরের প্রীতির মধ্যে প্রবেশলাভ করিয়াছে এবং সেই অন্তরের প্রীতি বিশ্বভুবনকে যেন পরিপ্লাবিত করিয়া রাখিয়াছে। এ শুধু অস্তরের উপলব্ধি নহে—এ উপলব্ধি অন্তর হইতে বাহিরে ব্যাপ্ত হইয়া সমস্ত প্রকৃতির মধ্যে, সমস্ত মানবের মধ্যে আপনাকে ফুটাইয়া তুলিবার জন্য উন্মুখ হইয়া রহিয়াছে। অন্তরের অন্তরতম হইয়াও, আপন সীমার মধ্যে নিশ্চল হইয়াও ইহা সমস্ত লোককে ব্যাপ্ত করিয়া রহিয়াছে এবং সমস্ত সীমাহীনের মধ্যে আপনাকে উন্মুক্ত করিয়া দিয়াছে— “নিত্য তোমায় চিত্ত ভরিয়া স্মরণ করি, বিশ্ববিহীন বিজনে আসিয়া বরণ করি ; তুমি আছ মোর জীবন-মরণ হরণ করি! তোমার পাইনে কুল, আপন মাঝারে আপনার প্রেম তাহার পাইনে তুল ! উদয় শিখরে সূর্য্যের মত সমস্ত প্রাণ মম চাহিয়া রয়েছে নিমেষনিহত একটি নয়ন সম । অগাধ অপার উদাস-দৃষ্টি নাহিক তাহার সীমা । তুমি যেন ওই আকাশ উদার, আমি যেন এই অসীম পাথার, আকুল করেছে মাঝখানে তার আনন্দপূর্ণিমা ! তুমি প্রশাস্ত চির নিশিদিন, আমি অশান্ত বিরাম বিহীন চঞ্চল অনিবার, যতদূর হেরি দিকৃদিগন্তে তুমি-আমি একাকার!”