পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

38२ রবি-দীপিত পর ও অবরকে লইয়া যিনি রহিয়াছেন তাহার সাক্ষাৎ লাভ করিতে পারিলে আমাদের সমস্ত হৃদয়গ্রস্থি ক্রটিত হইয়া যায় ; সমস্ত সংশয় বিলীন হয়, সমস্ত কৰ্ম্মাশয় ছিন্ন হইয়া যায়। কিন্তু প্রেমিক বলেন যে, প্রেমের প্রেরণায়ু যখন সমস্ত গ্রন্থি ছিন্ন হইয়া যায়, সমস্ত সংশয় দূর হইয়া যায়, তখনই যে বিরাট সত্তা পর ও আত্মাকে লইয়া রহিয়াছে তাহা আমাদের উপলব্ধিগোচর হইয়া উঠে ; ইহাতে দেহের আকর্ষণকে দমন করিবার কোন কথা নাই ; লাবণ্য বসকে উপভোগ করিবার বিরুদ্ধে কোন যুক্তি নাই। ইহার মৰ্ম্মকথা এই যে, যখন প্রেমের আপ্লাবন আসিয়া উপস্থিত হয়, তখন এই সমস্ত আকর্ষণ থাকিয়াও নাই হইয়া যায় । সৰ্ব্বত্র সংপ্লাবন হইলে কুপের কূপত্ব থাকে না, নদীর নদীত্ব থাকে না, পুষ্করিণীর পুষ্করিণীত্ব থাকে না—এক বিবাট প্রসারের মধ্যে সমস্তই অবিভক্ত হইয়া অবস্থান করে ও তাহাকে আপূৰণ করে কিন্তু তাহাকে সঙ্কীর্ণ করিতে পারে না । প্রেম এক হিসাবে Anti-biological বা জৈবগতি বিবোধী। কাম biological বা জৈববন্ধনে আবদ্ধ। জৈববন্ধনের মধ্যে মাহুষ আবদ্ধ। যদি সে বন্ধনের কোন মুক্তির পথ থাকে তবে সে পথও এই বন্ধনের মধ্যেই পাওয়া যাইবে । তাই কাম প্রেমের বিরোধী হইলেও কামকে অবলম্বন করিয়াই প্রেম উৎপন্ন হয়, পন্ধে পন্থজের উৎপত্তি, অথচ পঙ্ক থাকে গভীর জলের মধো ক্লিন্নতায় অবসন্ন হইয়া, আর পঙ্কজ মৃণালদণ্ডের উপব ভর করিয়া, পঙ্কে নিরুঢ়মূল হইয়া স্বৰ্য্যের দিকে, বিশ্বের দিকে, আপন বদন-মণ্ডল উদ্ভাসিত করিয়া, আপন-সৌরভে বিশ্বের রস আপনাদের মধ্যে অনুভব করে। কোন একটি হৃদয়ের নিকট যখন সমস্ত আবরণ প্রেমের উত্তাল-তরঙ্গে ভিন্ন হইয়া যায়, তখন সমস্ত হৃদয়-গ্রন্থি শিথিল হইয়া আসে এবং সেই শিথিল বন্ধনের মধ্য দিয়া মুক্তিধারার আনন্দ উপচিয়া উঠিতে থাকে। যে কাম মানুষকে দেহের দিকে টানে তাহার যদি বেগ থাকে, দীপ্তি থাকে, প্রেরণা থাকে, তবে তাহ দেহের আবরণের মধ্যে আপনাকে আবদ্ধ করিয়া রাখিতে পারে না । দেহের আনন্দ তাহার সহিত মিলিত হইতে পারে ; কিন্তু যে প্রেম দেহের বঁধি ভাঙ্গিয়াছে