পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/২০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S*२ রবি-দীপিতা প্রবাহে ফিরে যাওয়া যায় না। তাই বস্তুর সঙ্গে ক্রিয়ার কি সম্বন্ধ তা বোঝাতে গিয়ে দার্শনিকের চিরকালই গলদঘৰ্ম্ম হোয়েছেন। বস্তুটা বস্তু নয় সেটা স্পন্দ বা প্রবাহেরই একটা কল্পিত ধৰ্ম্ম মাত্র এই দৃষ্টিতে দেখলে বস্তু ও ক্রিয়ার দ্বন্দ্বের মীমাংসা হয় ; তাহলে যথার্থ সিদ্ধাস্ত হোল একটা স্পন্দের অদ্বৈত বাদ অর্থাৎ ম্পন্দ বা প্রবাহই একমাত্র সত্য। বস্তু একটা প্রতিভাসিক কাল্পনিক বা মায়িক হষ্টি মাত্র । বলাকার পরবর্তী যুগে লিখিত অধিকাংশ কবিতাতেই আমরা দেখতে পাই যে রবীন্দ্রনাথের মন এই স্পন্দ-দৃষ্টিতে বা প্রবাহ-দৃষ্টিতে একেবারে রঞ্জিত হোয়ে উঠেছে। এই দৃষ্টিটি কিন্তু উপনিষদের সংস্কারে আচ্ছন্ন রবীন্দ্রচিত্তের সম্পূর্ণ বিরোধী, কারণ উপনিষদ বারংবার বোলেছেন অথবা উপনিষদের অনেক মনীষী বাখ্যাতারা এই কথাই বলেছেন যে জগতের মধ্যে আমরা ষে ব্যাপার, স্পন্দন বা প্রবাহ দেখতে পাই সেটা তার সত্য রূপ নয়, জগতের যথার্থ সত্যরূপ হোচ্ছে বিশুদ্ধ সত্ত্বা মাত্র। সে সৎ স্বরূপের মধ্যে কোন গতি নাই, কোন প্রবাহ নাই । রবীন্দ্রনাথের “বলাকায়” প্রকাশিত নূতন দৃষ্টির সঙ্গে তার পুরাতন সংস্কারের তাই বাধলে দ্বন্দ্ব। তাই দেখতে পাই যে পরবর্তীকালের কোন কোন গ্রন্থে তিনি দুটোকেই একসঙ্গে স্বীকার কোরেছেন। জীবনকে দেখছেন প্রবাহরূপে, স্পন্দরূপে আর তার অস্তরালে, তার গভীরতম প্রদেশে ব্যাপ্ত হোয়ে রয়েছে গতিহীন স্পন্দহীন সৎস্বরূপ।